বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি গোয়েন্দা গল্পের সবথেকে আকর্ষণীয় অংশ হল তাদের সমাপ্তি। কারণ, সেখানেই মূল অপরাধীকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমগ্ৰ ঘটনাটি পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে, এবার এমন একটি ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে যেটি টেক্কা দিতে পারে হাড়হিম করা গোয়েন্দা গল্পকেও। মূলত, এবার উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) লখনউ পুলিশ অভিনবভাবে একটি জটিল ডাকাতির ঘটনাকে সমাধান করেছে। আর তারপর থেকেই বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর প্লেট খুঁজে বের করতেই অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছে পুলিশ। মূলত, পুলিশের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও তাতে কোনো লাভ হয়নি। আসলে ওই ফুটেজ জুম করেও গাড়ির নম্বর শনাক্ত করা যায়নি। তারপরেই কর্তব্যরত এডিসিপির একটি পদক্ষেপেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।
এই ঘটনাটি ঘটেছে লখনউয়ের জেহটায়। সেখানে গত ৭ সেপ্টেম্বর কয়েকজন দুষ্কৃতী একজন ঠিকাদারকে ছিনতাই করে ৪০০ গ্রাম রুপো সহ ২ লক্ষ টাকা চুরি করে। তারপরেই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। হিন্দুস্তান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর অনুযায়ী, পুলিশ ১০০ টিরও বেশি ফুটেজ পরীক্ষা করেছে। তবে, বিভিন্ন ফুটেজে একটি গাড়ি দেখা গেলেও কোনো ফুটেজেই ওই গাড়ির নম্বর দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: দিঘার চেয়েও দ্রুত পৌঁছনো যাবে পুরী? বড় পদক্ষেপ সরকারের, জানলে আনন্দে লাফাবেন আপনিও
জলে দেখা যায় নম্বর প্লেটের প্রতিফলন: যদিও, পুলিশ জলে নম্বর প্লেটের প্রতিফলন দেখতে পায়। আর তা জুম করলেই শেষ দুটি সংখ্যায় ১৫ নম্বরটি দেখা যায়। পাশাপাশি “UP 32” কোডটিও দৃশ্যমান ছিল। কিন্তু এর সাথে থাকা দুটি ইংরেজি অক্ষর দৃশ্যমান ছিল না। এমতাবস্থায়, এডিসিপি চিরঞ্জীব নাথ সিনহা আরটিও-র সাথে যোগাযোগ করেন। তারপর লখনউয়ের সমস্ত WagonR গাড়ির একটি তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকা থেকে, সেই সংখ্যাগুলি নির্বাচন করা হয়েছিল যা ১৫ দিয়ে শেষ হয়েছিল। তারপরে সাদা রঙের WagonR-এর নম্বরগুলি আলাদা করা হয়। এক্ষেত্রে মোট ১৩,০০ গাড়ির তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তদন্ত করে ওই গাড়িটির সম্পূর্ণ নম্বর জানতে পারা যায়।
আরও পড়ুন: এই ৮ টি সাফল্যের মন্ত্র মেনে চলেন রতন টাটা! যেগুলি বদলে দিতে পারে আপনার জীবনও
ওলায় চালাতেন গাড়ি: পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, আলমবাগের ঋষিকান্ত ওলায় এই গাড়ি চালাতেন। ডাকাতির পরে, ঋষিকান্ত গাড়িটি পার্ক করে গাড়ির মালিককে বলেছিলেন যে, তিনি আর গাড়ি চালাবেন না। তবে, পুলিশ তাঁকে ধরে ফেললে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। এই ঘটনায় মোট ১১ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনায় আরেকটি মজার বিষয় ঘটেছে। যে ঠিকাদার ডাকাতির সম্মুখীন হন তাঁর নাম মতিলাল। ডাকাতির সময় মতিলাল ও তাঁর নাতনী নয়নাকে বন্দি করা হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিল মাত্র ৪ জন এই অপরাধে জড়িত। তবে নয়না তাঁর বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে, ৫ জন দুষ্কৃতী ভিতরে এবং একজন দুষ্কৃতী বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। পরবর্তী তদন্তে নয়নার কথা সত্য বলে প্রমাণিত হয় এবং পুলিশ এটিকে ডাকাতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করে।