বাংলা হান্ট ডেস্ক: খেলাধূলার ময়দান থেকে রাজনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বনামধন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন বিশ্বাস মেনে চলেন। পাশাপাশি, কোনো শুভ কাজ শুরু করার আগেও ভালো সময় এবং স্থানকে প্রাধান্য দেন তাঁরা। বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক সেইরকমই এক প্রচলিত বিশ্বাস সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। যেটি বছরের পর বছর ধরে মেনে আসা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) নির্বাচনী আবহ পুরোদমে বজায় রয়েছে।
পাশাপাশি, রাজনৈতিক দলগুলি তাদের সব প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। এদিকে, আগামী বছর সম্পন্ন হতে চলা লোকসভা নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই নির্বাচনের ফলাফল আসন্ন নির্বাচনেও বড় প্রভাব ফেলবে। একদিকে, ভারতীয় জনতা পার্টি সেখানে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়, অন্যদিকে, কংগ্রেস সেখানে ক্ষমতায় আসার জন্য লড়াই করছে। এমন পরিস্থিতিতে, আগামী ১৭ নভেম্বর সেখানে নির্বাচন সম্পন্ন হবে এবং ৩ ডিসেম্বর রাজ্যে কার সরকার ক্ষমতায় আসবে সেই ফলাফল সামনে আসবে।
এদিকে, উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর ধামও এবারের নির্বাচনে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে। একদিকে বিজেপি এটি তৈরির নাম করে ভোটারদের মধ্যে প্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে দুর্নীতির নামে সরকারকে কোণঠাসা করছে কংগ্রেস। কিন্তু, এটা জানেন কি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ মুখ্যমন্ত্রী মহাকালের নগরী উজ্জয়িনীতে রাত কাটাতে পারেন না। আসলে বহু বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে এবং এর পেছনে একটি বড় কারণও রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানেই ফের সস্তা হল সোনা! প্রতি গ্রাম কিনতে গেলে এবার লাগবে এত টাকা
বিশ্বাস করা হয় যে, সেখানে যিনি (শাসক বা রাজনীতিবিদ) রাতে থাকবেন তিনি তাঁর শক্তি তথা ক্ষমতা হারাবেন। এই মিথকে ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে বড় মিথ বলে মনে করা হয়। আর এই কারণেই সারা বছর এখানে রাজনীতিবিদদের সমাগম থাকলেও কেউ সেখানে রাত কাটান না। তাঁরা হয় সেখান থেকে চলে যান নাহলে পাশের শহর ইন্দোরে গিয়ে রাতে থাকেন।
আরও পড়ুন: ১০০ টাকা হাতে নিয়ে শুরু হয়েছিল সফর! আজ ১১,৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক ইনি
বাবা মহাকালকে উজ্জয়িনীর রাজা মনে করা হয়: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বাবা মহাকালকে উজ্জয়নের রাজা বলে মনে করা হয়। তাই, বাবা মহাকালের নগরে কোনো দ্বিতীয় রাজা রাজত্ব করতে পারেন না। যদি এমনটি হয় সেক্ষেত্রে সেখানে রাতে অবস্থানকারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাঁর ক্ষমতা হারাবেন বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি, এটি বহুবার সত্য হিসেবেও প্রমাণিত হয়েছে। তারপরে এই বিশ্বাস আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হতে শুরু করে। একবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজী দেশাই এখানে এসে রাত্রিযাপন করেছিলেন। পরদিনই তাঁর সরকারের পতন ঘটেছিল।
বিএস ইয়েদিউরপ্পার সরকারও ক্ষমতা হারায়: এছাড়াও, কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদিউরপ্পা ঘটনাক্রমে এখানে একটি রাত কাটিয়েছিলেন। তাঁকে ২০ দিন পরে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। উল্লেখ্য যে, রাজা বিক্রমাদিত্যের সময়ে উজ্জয়িনী রাজধানী ছিল। মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিরা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, রাজা ভোজের সময় থেকেই এই প্রথা চলে আসছে। তখন থেকেই উজ্জয়িনীতে কোনো রাজা বা শাসক রাতে বিশ্রাম নেন না। ভুল করেও কেউ যদি থেকে যান তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁকে ফল ভোগ করতে হয়। হয় তাঁরা তাঁদের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন এমনকি, কিছু রাজা মারা গেছেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।