বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে লাদাখের (Ladakh) সীমানার বিষয়ে চিন (China) এবং ভারত (India) দু’পক্ষই কোনো সমাধানসূত্র খুঁজে পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তে যেকোনো সময়ে ফের সংঘর্ষ বাধার ঝুঁকি রয়েছে। ঠিক এই আবহেই এবার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সীমান্তে একটি সুড়ঙ্গ বানাচ্ছে ভারত। যেটির নাম হল জোজি-লা টানেল। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, জোজি-লা টানেল তৈরি হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সেনাবাহিনী পৌঁছে যাবে লাদাখ সীমান্তের কাছাকাছি।
এদিকে, হিমালয়ের বুক চিরে তৈরি হওয়া এই সুড়ঙ্গপথ জুড়ে দেবে লাদাখের কার্গিল এবং কাশ্মীরের গন্দেরবালকে। এমতাবস্থায়, টানেলটি তৈরি হয়ে গেলে এটি ভারতের পাশাপাশি এশিয়ারও দীর্ঘতম টানেল হিসেবে বিবেচিত হবে। এই সুড়ঙ্গের পরিকল্পিত দৈর্ঘ্য হল ১৪.২ কিলোমিটার। এদিকে, সম্পূর্ণ পাহাড় ফাটিয়ে এই দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ তৈরি করতে যে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১ হাজার ৫৭৫ ফুট উঁচুতে তৈরি হওয়া এই সুড়ঙ্গের অর্ধেক কাজ প্রায় শেষের পথে। পাশাপাশি, সমস্ত কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে ২০২৬ সালের মধ্যেই শেষ হবে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ। যদিও, তার আগে বহু পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে জোজি-লা টানেলকে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, জোজি-লা টানেলে থাকবে একাধিক অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য রাজ্য সরকারের মেগা প্ল্যান! প্রতিমাসে মিলবে ২,৫০০ টাকা, এভাবে করুন আবেদন
যার মধ্যে রয়েছে সিসিটিভি নজরদারি, বিদ্যুৎ সংযোগ, বেতার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থাও। “নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথড” নামে পরিচিত অস্ট্রিয়ায় ব্যবহৃত সুড়ঙ্গ খননের আধুনিক প্রক্রিয়ার সাহায্যেই তৈরি করা হচ্ছে এই সুড়ঙ্গ। তবে, এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজটি কিন্তু যথেষ্ট কঠিন। পাশাপাশি, প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা বিষয়টিকে আরও প্রতিকূল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে বড় পদক্ষেপ! খড়্গপুরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৫ দিনের মেগা ট্রেড ফেয়ার
মূলত, বর্তমানে ঘোড়ার নালের আকৃতির দু’টি সুড়ঙ্গপথ পাশাপাশি তৈরি করার কাজ চলছে। আর এই সুড়ঙ্গ বানানোর জন্য কার্গিল এবং গন্দেরবালে তৈরি হয়েছে আলাদা বসতিও। সামগ্রিকভাবে দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গগুলি কাটতে কাটতে এগোচ্ছে দু’টি দল। কাজের শেষে তাদের মুখোমুখি দেখা হবে। আপাতত কাজের লক্ষ্য হিসেবে প্রতিদিন ১০ ফুট করে গভীরে প্রবেশ করার কাজ চলছে।
অর্থাৎ, সোজা কথায় রোজ ১০ ফুট পাহাড় কাটা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, প্রতিদিন সাড়ে চার কোটি বছরের পুরোনো পাথরকে ভাঙার কাজ যেমন কঠিন, তেমনই জীবনের ঝুঁকিও কিন্তু কম নেই। এদিকে, এই টানেল তৈরি হলে পরিবহণের ক্ষেত্রে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি কাশ্মীর এবং লাদাখের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।