বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে (India) গণপরিবহণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল রেলপথ (Indian Railways)। দেশজুড়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চেপেই পৌঁছে যান নিজেদের গন্তব্যে। এদিকে, ক্রমবর্ধমান যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এবং তাঁদের সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় রেলের তরফে। তবে, এবার একটি বড় তথ্য সামনে এসেছে।
মূলত, বর্তমান সময়ে ট্রেনগুলিতে জেনারেল কোচের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কারণ, এখন রেলের তরফে AC কোচ (বিশেষত 3AC কোচ) চালু করার বিষয়েই প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এদিকে, বৃদ্ধি পাচ্ছে ভাড়ার পরিমাণও। এর ফলেই প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন মধ্যবিত্ত যাত্রীরা। কারণ, এই খরচের পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়টি টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে তাঁদের চিন্তা বাড়াচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, উত্তর পূর্ব রেলওয়ে প্রায় ৪০ টি এক্সপ্রেস ট্রেনে ১০০ টিরও বেশি AC কোচ ইনস্টল করা হয়েছে। এদিকে, নতুন ইনস্টল করা AC কোচগুলির মধ্যে ৭৫ শতাংশের বেশি থ্রি টিয়ারের কোচ। এর ফলে ট্রেনে ক্রমাগত কমেছে সাধারণ ও স্লিপার কোচ। এমতাবস্থায়, রেলের এহেন নতুন নীতি মধ্যবিত্ত পরিবারের যাত্রীদেরকে সমস্যায় ফেলেছে।
আরও পড়ুন: কেন তীব্র সঙ্কটের মুখে পড়ল পাকিস্তান? নীরবতা ভেঙে জানালেন স্বয়ং মন্ত্রী, সামনে এল আসল সত্যি
এমনকি, পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে যাচ্ছে যে, কেউ কেউ টয়লেটেও ভ্রমণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ বেশ কয়েকটি ট্রেনে জেনারেল এবং সংখ্য স্লিপার ক্লাস কমে যাওয়ায় তাঁদের সফর করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষত উৎসবের মরসুমে যখন ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল তখন এই সমস্যা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: বিয়ে বাড়ির খাওয়ার খেয়ে অসুস্থ শতাধিক, ভর্তি হতে হল হাসপাতালে, তুমুল চাঞ্চল্য এলাকায়
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, রেল বোর্ড প্রতিটি ট্রেনে সর্বোচ্চ ২২ টির মধ্যে কমপক্ষে ১৮ টি AC কোচ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি, তারা দাবি করেছে যে, এটি যাত্রীদের সুবিধা দেবে এবং ট্রেনের গতি বাড়াবে। তবে, এর ফলে স্লিপার এবং সাধারণ কোচের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। যেগুলিতে যাত্রীদের অধিকাংশজনই সফর করেন।
উদাহরণস্বরূপ, যাঁরা গোরখপুর বিভাগ থেকে প্রতিদিন গোরখধাম, বৈশালী, বিহার যোগাযোগ ক্রান্তি, সত্যাগ্রহ, সপ্তক্রান্তি এবং অন্যান্য এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে দিল্লিতে যাতায়াত করেন তাঁরা জেনারেল কোচে সিট খুঁজে পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। কারণ, সেগুলির সংখ্যা মাত্র চার বা দুইতে নেমে এসেছে। এমতাবস্থায়, অনেকে আপদকালীন জানালার মাধ্যমে বা টয়লেট প্রবেশ করে যাতায়াত করতে বাধ্য হন।
কেন নেওয়া হচ্ছে এমন সিদ্ধান্ত:
আসলে, বর্তমানে ভারতীয় রেল বেশি লাভ হাসিল করার জন্য বেশ কয়েকটি ট্রেনে AC কোচ বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ব্যবস্থা সাধারণ যাত্রীদের সমস্যা বাড়াবে। কারণ, তাঁরা ইতিমধ্যেই যাত্রীবাহী ট্রেনের উচ্চ ভাড়ার মধ্যে রয়েছেন। তাই, এই পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে এবং রেল বোর্ডের শর্তাবলির সংশোধনের দাবিও জানানো হয়।