বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিন যায় মাস যায়, এখনও অধরা কণ্ঠস্বর! নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় বহুমাস জেলবন্দি কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujaykrishna Bhadra)। বর্তমানে নিজের ‘মূল্যবান’ কণ্ঠস্বর নিয়ে তিনি চর্চার শিরোনামে। বহু কাঠখড় পুড়িয়েও এখনও কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করতে পারেন নি তদন্তকারীরা। এবার এই ইস্যুতেই তাকে জ্বর বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কালীঘাটের কাকুর একটি ছবি পোস্ট করে শুভেন্দু লেখেন, ‘সেই কণ্ঠস্বরের নমুনার জন্য সবাই বহু অপেক্ষা করে বসে আছে, একমাত্র তার ‘মালিক’ ছাড়া। এদিকে ওই টুইটে কালীঘাটের কাকুর ছবির নীচে লেখা, ‘একবার কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠের নমুনা সংগ্রহ করা হলে ‘তার সাহেবের’ দম বন্ধ হয়ে যাবে।
সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতারির পর থেকে বিস্ফোরক সব তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। দুর্নীতির রহস্যভেদ করতে তদন্তকারীদের চাই কাকুর কণ্ঠস্বর। আর সেই কণ্ঠস্বরের নমুনা নিয়ে বারবার টালবাহানা। অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ! আর সেই কারণেই কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। তবে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে বারংবার জানানো হচ্ছে অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ। সম্প্রতি চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রবল মানসিক চাপে রয়েছেন কালীঘাটের কাকুর। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। এই অবস্থায় তার গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গেলে সমস্যা বাড়বে। তবে ইডিও ছাড়ার পাত্র নয়। কণ্ঠস্বরের নমুনা দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা সুজয়কৃষ্ণের আছে কি না, সে বিষয় খতিয়ে দেখতে তৎপর সংস্থা।
আরও পড়ুন: দলেরই ‘এই’ সাংসদের বিরুদ্ধে CBI তদন্ত চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি কুণালের! পাল্টা সায় দিল শাহ
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গত মার্চ মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তকারীদের দাবি, বিষ্ণুপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে বহুদিন আগে।
ইডির দাবি এই সুজয়কৃষ্ণই রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে কল রেকর্ডিং এ সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। মেলে আদালতের সবুজ সংকেতও।
তবে এরই মধ্যে হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয় তার।
এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। এরপর হাসপাতালে গিয়েই কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় আদালত। তবে এখনও সেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।