বাংলা হান্ট ডেস্ক : যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) পর গেরুয়া শিবিরে ফের এক যোগীর আবির্ভাব। একইরকম চোখা চোখা শব্দ আর একইরকম ভাবমূর্তির অধিকারী রাজস্থানের ‘যোগী’ মহন্ত বালকনাথ (Mahant Balaknath) প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, বিজেপি (Bharatiya Janata Party) তার উপর ভরসা করে কোনও ভুল করেনি। মরুরাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা তিজরাতে পদ্ম ফুটিয়েছেন তিনি।
তিজরাতে কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী ইমরান খানের বিরুদ্ধে মহন্ত বালকনাথের নাম ঘোষণা করেছিল বিজেপি। সেই সময় অনেকেই দাবি করেছিল, এই সিদ্ধান্ত বিজেপির জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত প্রমাণ হতে পারে। তবে সেই সমস্ত দাবিকে নাকচ করে গেরুয়া পতাকা উড়িয়েছেন যোগী মহন্ত বালকনাথ। উল্লেখ্য, তিনি যোগী আদিত্যনাথ না হলেও নানা ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, তিনি আদিত্যনাথকে নিজের রাজনৈতিক গুরু বলে মানেন।
তিনিও গুরু আদিত্যনাথের মতোই গেরুয়া বসন পরেন। সেই সাথে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘বড় ভাই’ বলেও সম্বোধন করেন তিনি। একাধিকবার নানা ঘটনায় তার মুখে উঠে এসেছে বুলডোজারের কথা। তারপর থেকেই ৩৯ বছর বয়সী এই যোগীজিকে নিয়ে মানুষের মনে কৌতুহলের শেষ নেই। তিনি কোথা থেকে এসেছেন, কী তার অতীত? এই সবকিছুতেই আগ্রহ খুঁজে পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
জানা যাচ্ছে, বালকনাথ হলেন রোহতকের মস্তনাথ মঠের অষ্টম মহন্ত। এটি নাথ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। এই সম্প্রদায়ের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল রয়েছে। মহন্ত বালকনাথের জন্ম, ১৯৮৪ সালে বেহেরোদের একটি গ্রামে। তিনি মূলত যাদব পরিবারের সন্তান। জেনে অবাক হবেন যে, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়া সত্বেও মাত্র ছয় বছর বয়সে ক্ষেত্রনাথের আশ্রমে পাঠানো হয় বালকনাথকে। তখন থেকেই তপস্বী জীবন যাপন শুরু করেন তিনি।
এরপর থেকেই তার যোগসূত্র নাথ সম্প্রদায়ের সাথে। হিন্দু ধর্মে বৈষ্ণব এবং শৈব সম্প্রদায়ের মানুষ অনেক আছে। যার মধ্যে নাথ শৈব সম্প্রদায়েরই একটি শাখা। বলা হয়, ভগবান শিব নিজে এই সম্প্রদায়ের সূচনা করেছিলেন। ভীষণ কঠিন হয় নাথ সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনযাপন। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে আচার ব্যবহার, সবেতেই থাকে কঠোর বিধিনিষেধ। উল্লেখ্য, হিন্দু হওয়া সত্বেও মৃত্যুর পর নাথ সম্প্রদায়ের মানুষদের শরীর দাহ করা হয়না। তাদের সমাধি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : কংগ্রেসের ভরাডুবির পর বাতিল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক! ‘পিণ্ডি চটকে গেছে’ বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর
পড়াশোনার কথা বললে, তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। নির্বাচনী হলফনামা বলছে, তিনি ১৪ লক্ষ টাকার মালিক। তিনি যে কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তা মূলত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। তিজারা কেন্দ্রে প্রায় ২ লক্ষ ৬১ হাজার ভোটারের মধ্যে মুসলিম ভোটদাতা প্রায় ১ লক্ষ। আর এই বিপুল জনসংখ্যার একটা বড় অংশ যে যোগীজির উপরেই ভরসা রেখেছেন তা বলাই বাহুল্য।