বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অবশেষে আইসিইউ থেকে বেরোলেন ‘অসুস্থ’ ‘কালীঘাটের কাকু’। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর (Sujaykrishna Bhadra) কণ্ঠস্বরের নমুনা পেতে মরিয়া ইডি। গত শুক্রবারই কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে চেয়েছিল ইডি (Enforcement Directorates)। তবে তার আগের রাতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তড়িঘড়ি তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তবে সকলকে নিশ্চিন্ত করে মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম এর ICU থেকে বার করে আনা হল তাকে।
সূত্রের খবর, বুধবার মোটামুটি সুস্থই রয়েছেন কাকুর। হাসপাতাল সূত্রে খবর বর্তমানে নিজের কেবিনেই রয়েছেন তিনি। তবে আপাতত সুস্থ থাকলেও এই সুস্থতা কতদিন থাকবে সেই নিয়ে চিন্তিত ইডি। সুত্রের খবর, এসএসকেএম থেকে সরিয়ে কাকুকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে ইডি। তবে তার জন্য চাই আদালতের অনুমতি। ইডি সূত্রে খবর, এই নিয়ে ইতিমধ্যেই আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু করেছেন তারা।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গত মার্চ মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তকারীদের দাবি, বিষ্ণুপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে বহুদিন আগে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ফের শ্যুটআউট, বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে গুলিতে ঝাঁঝরা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের জামাই
ইডির দাবি এই সুজয়কৃষ্ণই রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে কল রেকর্ডিং এ সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। মেলে আদালতের সবুজ সংকেতও। তবে এরপরই শুরু টালবাহানা।
অন্যদিকে এসবের মধ্যেই হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয় তার। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। এরপর হাসপাতালে গিয়েই কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় আদালত। তবে এখনও সেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। কণ্ঠস্বর সংগ্রহে একের পর এক বাধা এসেই চলেছে।
এই একাধিক এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের ভূমিকাতেও প্রশ্ন তুলেছে ইডি। উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে চেয়েছিল ইডি (Enforcement Directorates)। সেই লক্ষ্যে সকালে জোকার ইএসআই হাসপাতাল থেকে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসএসকেএমে পৌঁছেও যান ইডির আধিকারিকরা।
তবে হাসপাতালে পৌঁছে ইডি খবর পায় কালীঘাটের কাকুর বুকে ফের ব্যথা শুরু হয়েছে। সেই কারণে বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে আইসিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসিসিইউ এর ১৮ নম্বর বেডে ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। হাসপাতালের অনুমতি না মেলায় সুজয়কৃষ্ণকে শুক্রবার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি ইডি। এভাবে বারংবার তদন্ত পিছিয়ে যাওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ইডি। তাই এবার কাকুকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় কিনা সেই চিন্তাভাবনা করছে ইডি।