বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) তদন্তে ক্রমেই উঠে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। গত অক্টোবর মাসে রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে (Jyotipriya Mallick) গ্রেফতার করে ইডি (Enforcement Directorates)। তার আগে বাকিবুর (Bakibur Rahaman) নামের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই দুজনার যোগসূত্র ধরেই তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। রেশন ‘দুর্নীতির টাকা’ বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এই দুর্নীতির টাকা যাদের কাছে পাঠানো হত তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে মন্ত্রীমশাই চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করল ইডি।
আদালতে চার্জশিট পেশ করে ইডির দাবি, মন্ত্রী যাদের যাদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন তাদের মধ্যে এক জন রেশন দুর্নীতিতে ধৃত মিল মালিক বাকিবুর রহমানের শ্যালক অভিষেক বিশ্বাস। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বনমন্ত্রী থাকাকালীন অভিষেককে নিজের দফতরে চাকরি দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক ওরফে বালু। প্রসঙ্গত, অভিষেক সহ বাকিবুরের দুই স্ত্রীকেও এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। তাতেই এইসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। আগেই ইডি জানিয়েছিল, সাধারণ মানুষের জন্য পাঠানো রেশনের খাদ্যসামগ্রী নয়ছয় করতেন বালু-‘ঘনিষ্ঠ’ ইউ বাকিবুর রহমান এবং তার সহযোগীরা। ইডির অনুমান, রেশন ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর থেকে শুরু করে খাদ্য দফতরের বেশ বেশ কয়েক জন আধিকারিকও এই দুর্নীতিতে যুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাকে ঢাকতে চাইছেন? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পর্ষদকে ধমক, বিচারপতি সিনহার এজলাসে তোলপাড়
চার্জশিটে ইডির দাবি, ভুয়ো চাষিদের নামে অন্তত ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল বালু-বাকিবুর জুটি। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে ধানের সহায়ক মূল্য বাবদ প্রায় সাড়ে চারশো কোটি টাকা হাতিয়েছেন এই দুজন। ইডির দাবি, কেবল বাকিবুর নয়, বাকিবুরের পরিবারের সদস্যরাও জ্ঞানত বা অজান্তে সেই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। বাকিবুরের শ্যালক অভিষেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও রেশন দুর্নীতির টাকা ঢুকেছে।
ইডির দাবি, কলকাতার আশেপাশের একাধিক জায়গায় বাকিবুরের নামে প্রচুর সম্পত্তির হদিস মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা, বারাসত এবং বাদুড়িয়াতে এই সম্পত্তির পরিমাণ অনেক বেশি। নদিয়াতেও বাকিবুর ও তার ঘনিষ্ঠ কিছুজনের নামে সম্পত্তির হদিস মিলেছে। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, এই মামলায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৫০ জনকে সাক্ষী হিসাবে রাখা হয়েছে।