বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি হারানোর আবহেই এবার ভয় ধরাচ্ছে প্রাথমিকে (TET Scam) ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা। গত মঙ্গলবার এই মামলা শুনানির কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) উঠলে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘দুর্নীতি ধরা পড়লে, চাকরি বিক্রিতে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা জড়িত আছেন তা জানলেও কি একজন বিচারপতি চুপ করে থাকবেন?’ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতির স্পষ্ট মন্তব্য, “প্রাথমিক এর ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় কে সুবিধা পেয়েছে, কে পায়নি সেটা দেখবো না। দুর্নীতি দেখলে পদক্ষেপ করবো।”

সুতোর উপর ঝুলছে ৩২ হাজারের ভাগ্য | TET Scam
এদিন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র সওয়াল করেন, “স্পইরাল বাইন্ডিং এর তথ্য কি করে গ্রহনযোগ্যতা পেল? বোর্ড কিছু বাধা দেয়নি। ২০১৪ সালের টেটের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়। সেই সময় এসবসু রায় সংস্থা ওএমআর শিট মূল্যায়নের দায়িত্ব ছিল। সমস্ত দুর্নীতি টেট সম্পর্কিত। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নয়।
বিচারপতির মন্তব্য, “দুটিই তো সম্পর্কিত।” আইনজীবী বলেন, “যা শূন্যপদ ছিল তার চেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু আমরা নিয়োগ খারিজ করার পক্ষে নই। তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়াতে দুর্নীতির কারণেই। আইন ছাড়াই ন্যায়বিচারের প্রশ্ন থাকছে একক বেঞ্চের নির্দেশে। সকলের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল এটা কি করে বলা যায়?” প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী।
পাল্টা বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, “কে সুবিধা পেয়েছে। কে পায়নি সেটা দেখবো না। দুর্নীতি দেখলে পদক্ষেপ করবো।” আইনজীবী জানান, “আবেদনকারীদের মৌখিক বক্তব্যের ভিত্তিতেই মডিফিকেশন করা হয়েছিল।” টেট পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে প্রমাণিত আর তাই প্রাথমিক নিয়োগেলো দুর্নীতি যুক্ত বলে মনে করছে আদালত। আগামী ৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
কোন মামলা?
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৪২ হাজার ৯৪৯ জন চাকরি পান। কিন্তু, নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে একাধিক ‘ক্রুটি’র কথা জানিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর প্রেক্ষিতে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন। নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যকে। তবে এখানেই কাটেনি জট।
আরও পড়ুন:
হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশের পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। সেই মামলাই বর্তমানে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে চলছে। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৭ জুলাই। এসএসসি কাণ্ডে ২৬০০০ চাকরি যাওয়ার আবহে প্রাথমিকের ৩২০০০ মামলায় হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেন, সেদিকে নজর রয়েছে সব পক্ষের।