বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya)। মুখ্যমন্ত্রীর ১৪ বছর আগের ‘কলকাতা লন্ডন হবে’ প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ জানত সেটা হবে না। তবু গণতন্ত্র ফেরানোর আশায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস করেছিল।’’ এখন সেই গণতন্ত্র আর নেই বলেই দাবি শমীকের (Shamik Bhattacharya)। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে রাজ্যের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, শিল্প এবং সাংস্কৃতিক পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ।

রাজ্যে সংবিধানের স্তম্ভ আক্রান্ত, অভিযোগ বিজেপির (BJP)
শমীকের অভিযোগ, রাজ্যের সংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। আদালত, সংবাদমাধ্যম, রাজ্যপাল পর্যন্ত আক্রান্ত। বিধানসভার অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘বিধায়কদের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করে দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। রাজ্যপালকে বিধানসভায় আসার জন্য অনুমতি নিতে হচ্ছে!’’ পুলিশ প্রশাসনের উপর কেউ আর আস্থা রাখছেন না বলেও অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘পালাবদল হলেও রাজ্যে কোনও বাস্তব পরিবর্তন আসেনি।’
ধর্মের নামে বিভাজন তৃণমূলের নতুন পরিচয়
রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণকেই বড় বিপদ হিসেবে দেখছেন বিজেপি (BJP) সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘ধর্মতলায় সৌন্দর্যায়ন বদলে যাচ্ছে। মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম ‘দাওয়াতে ইসলামের’ কথা বলছেন। অনিতা দেওয়ান খুন হচ্ছেন, আর মন্ত্রীরা বলছেন ‘হাম দো হামারে চার’।’’ তিনি জানান, এ রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি এখন পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলার সংখ্যালঘু ভোটের জোরেই তৃণমূল টিকে আছে বলে অনেকে ভাবছেন, তাঁদের আসাম-ত্রিপুরার ডেমোগ্রাফি দেখে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শমীক।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের সাথে ৪২ লক্ষ ভোটের ফারাক! কিভাবে মিটবে ব্যবধান? বিধানসভা ভোটের আগে অঙ্ক কষছে গেরুয়া শিবির
রাজ্যে শিল্পহীনতার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি সভাপতির বলেন, গত তিন বছরে প্রায় ২,৫০০ সংস্থা তাদের হেডকোয়ার্টার কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়েছে। সরকারি নীতির কারণে ৪৩টি রেল প্রকল্প আটকে রয়েছে, কারণ সরকার ৭৯ শতাংশ জমি দিতে পারেনি। চাল উৎপাদনে বাংলা এখন এক থেকে তিন নম্বরে নেমেছে। আলু চাষিরা আত্মহত্যা করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
রাজ্যের কলেজগুলিতে তৃণমূল নেতাদের ‘দখলদারি’ নিয়েও মুখ খোলেন শমীক (Shamik Bhattacharya)। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সব মন্ত্রীই কোনও না কোনও কলেজ গভর্নিং বডিতে বসে আছেন। আর সেই আমলেই আদালত ইউনিয়ন রুমে তালা মারছে।’’ তিনি মনে করিয়ে দেন, কসবা ল’ কলেজ কাণ্ডের মূল অভিযুক্তরাও তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ। দুর্নীতি, দখলদারি ও দলীয় দমননীতির ছবি কলেজে স্পষ্ট। শেষে শমীক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘তৃণমূল যাচ্ছে, কেউ আটকাতে পারবে না। শিল্পপতিদের বলছি—ভয় পাবেন না। বিজেপি (BJP) সরকার এলে লালফিতের ফাঁস কেটে তোলাবাজি বন্ধ হবে।’