বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) থাকা শীর্ষ মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী এবং তাদের সহযোগীদের মৃত্যুর মিছিল শেষ হচ্ছে না। সবথেকে বড় কথা হল, গত কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানে “এ” গ্রেডের সন্ত্রাসবাদীরা অজ্ঞাত হামলাকারীদের গুলির “টার্গেট”-এ পরিণত হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসেই পাকিস্তানে উপস্থিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন “লস্কর-ই-তৈবা”-র একাধিক বড় মুখকে নির্মূল করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে “এ” গ্রেডের সন্ত্রাসবাদী হাবিবুল্লাহ ওরফে ভোলা খান। যাকে “লস্কর-ই-তৈবা”-র প্রধান হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলে মনে করা হয়। এছাড়াও, হাজি উলমার গুল এবং শীর্ষ এলইটি প্রশিক্ষক আবদুল্লাহ শাহীন ওরফে “জিহাদি গুরু”-ও সামিল রয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানে একাধিক সন্ত্রাসবাদী নিহত হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা। ওই সব প্রধানরা এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হাফিজ সাইদ, সৈয়দ সালাহউদ্দিন, মাসুদ আজহার, আবদুল রহমান মাক্কি এবং জাফর ইকবাল প্রমুখরা। বিশেষ বিষয় হল, তাদের সবাইকে পাকিস্তানে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
কেন সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করা হচ্ছে: কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সূত্র বলছে, পাকিস্তানের একাধিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে। যেগুলি ইউএনওর বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় স্থান পেয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের “গ্রে” তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে পাকিস্তান। বিশ্বকে দেখানোর জন্য পাকিস্তান কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসীবাদীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।
এদিকে, বর্তমানে পাকিস্তান গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, তারা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে আর বহন করতে পারছেন না। যেগুলিকে তারা কয়েক দশক ধরে ব্যবহার করে আসছে। “গ্রে” তালিকার বাইরে থাকতে এবং পুরোনো সন্ত্রাসবাদীদের খরচ এড়াতে এখন সেখানে সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করা হচ্ছে। অন্যদিকে কম খরচে তরুণ সন্ত্রাসবাদী নিয়োগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এবার খেলা-বিনোদন জগতেও বাড়বে আম্বানির আধিপত্য! বড় চুক্তির পথে জিও
এই সন্ত্রাসবাদীরা এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছে: জানিয়ে রাখি যে, পাকিস্তানের করাচিতে হানজালা আদনান অজ্ঞাত হামলাকারীদের দ্বারা বেশ কয়েকবার গুলিবিদ্ধ হন। আদনানের মৃত্যুকে “লস্কর-ই-তৈবা” প্রধান হাফিজ সইদের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এদিকে, ভারতের তীব্র সমালোচক মালিক আসলাম ওয়াজিরকে বিস্ফোরণের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দাজা ঘুন্দাই এলাকায়। উজিরের সাথে তার ছেলে ও অন্য একজনকেও হত্যা করা হয়। উজিরের বিষাক্ত বক্তৃতার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী নিয়োগ করা হয়। “জইশ-ই-মোহাম্মদ” নেতা মাওলানা মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাওলানা রহিম তারিক উল্লাহ ১৩ নভেম্বর করাচিতে অজ্ঞাত হামলাকারীদের গুলির টার্গেট হয়েছিল। তার আগে, পাকিস্তানের বাজাপুরে “লস্কর-ই-তৈবা” প্রধান হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আকরাম খান ওরফে আকরাম গাজিও অজ্ঞাত হামলাকারীদের হাতে নিহত হয়। কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদের আথমুকাম তহসিলে খুন হয় খাজ শহীদ ওরফে মিয়াঁ মুজাহিদ। খাজ শহিদকে ২০১৮ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের সেনাবাহিনীর সুঞ্জওয়ান ক্যাম্পে সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচনা বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: শীতে বাজার কাঁপাচ্ছে এই স্বদেশী খুদে গিজার! মাত্র ১ মিনিটেই মিলবে অফুরন্ত গরম জল, দাম একেবারে সস্তা
দাউদ মালিক থেকে আবদুল ভাট্টাভি: ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী দাউদ ইব্রাহিমের “ডি কোম্পানির” সদস্য হেনম্যান মোহাম্মদ সেলিম পাকিস্তানে নিহত হয়েছে। তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় দরগাহ আলী শাহ সখী সরমস্তের কাছে লিয়ারি নদীতে। এদিকে, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন “জইশ-ই-মোহাম্মদ”-এর নেতা মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ দাউদ মালিকও পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে নিহত হয়েছে। পাঠানকোট হামলার মূল পরিকল্পনাকারী শহিদ লতিফ এবং আইএসআই এজেন্ট মোল্লা বাহাউর ওরফে হরমুজও প্রাণ হারিয়েছে। দাউদ মালিক, শহীদ লতিফ, বশির আহমেদ পিয়ার ওরফে ইমতিয়াজ, আবু কাসিম, পরমজিৎ সিং পাঞ্জওয়াদ, জহুর মিস্ত্রি, খালিদ রাজা এবং আবদুল সালাম ভাট্টাভির মতো সন্ত্রাসবাদীরাও পাকিস্তানে নিহত হয়েছে।