বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিজের বিধানসভা এলাকাতেই হামলার মুখে পড়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। দলের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার কথা—সব মিলিয়ে তৈরি হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার তাঁকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রায় পাঁচ মিনিটের ওই কথোপকথনে মুখ্যমন্ত্রী নাকি আশ্বাস দেন, দোষীদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না। ঘটনার তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন, সাতজন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার (arrest) হয়েছে, আরও কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দলের (Trinamool Congress) দিকেই সরাসরি অভিযোগ
সিদ্দিকুল্লা (Siddiqullah Chowdhury) প্রথম থেকেই বলেছিলেন, “হামলাকারীরা তৃণমূলের (Trinamool Congress) মধ্যেই রয়েছে।” শুধু তা-ই নয়, যাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন, সেই পুলিশ (police) ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “যদি দল বা প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়, দল ছাড়ব।” রাজনৈতিক মহলের মতে, একজন বর্তমান মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে স্পষ্ট যে দলের ভিতরেই ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। এর আগে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ফোন করে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের পরে প্রথমবার একটু নরম সুরে কথা বললেন মন্ত্রী।
পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
সিদ্দিকুল্লার কথায়, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, কোনও অন্যায় হলে শাস্তি হবেই। আমি নাম দিয়েছি, পুলিশ জানে কারা অপরাধী। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে যা ঘটুক, ব্যবস্থা নেবেন।” একইসঙ্গে তিনি জানান, সরকারি আমলারাও এবার সক্রিয় হয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ফোন কেবল ‘সান্ত্বনার’ বার্তা নয়, দলের ভিতরের ক্ষোভ প্রশমনের একটা কৌশলও।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা গিয়েছে, কীভাবে অনুষ্ঠানস্থলে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই ভিডিওর ভিত্তিতেই দোষীদের শনাক্ত করছে প্রশাসন। তবে মন্ত্রীর নাম দেওয়া সত্ত্বেও কেন এতদিনে সবাই ধরা পড়েনি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও পুলিশ (Kolkata Police) জানিয়েছে, তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ দলবদলের জল্পনার মাঝেই শমীক-সাক্ষাৎ দিলীপের, বেরিয়ে বললেন, ‘দাম আছে আর থাকবে’
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলে (Trinamool Congress) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (infighting) এখন প্রকাশ্যে। নিজের কেন্দ্রেই যদি মন্ত্রী নিরাপদ না থাকেন, তাহলে সেটা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, বরং দলের ভিতরের সংঘাতেরই প্রতিফলন। এখন দেখার, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কতটা স্বাভাবিক হয়।