বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নবান্নে এক গোপন বৈঠক আর তাতেই উস্কে উঠেছে নতুন জল্পনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে বুধবার সাক্ষাৎ করলেন টাটা গোষ্ঠীর (Tata Group) কর্ণধার এন চন্দ্রশেখরণ (N Chandrasekaran)। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (Chief Secretary Manoj Pant)। তবে ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। টাটার পক্ষেও নয়, মুখ্যমন্ত্রীর তরফেও নয়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডলে (X Handel) সেই বৈঠকের ছবি পোস্ট হতেই গুঞ্জন ছড়াতে শুরু করে। ছবি-সহ দেওয়া হয় বার্তা, “শিল্পক্ষেত্রে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর সরকার। আশা করা যায়, এই আলোচনা ভবিষ্যতের শিল্প বিনিয়োগে (Investment) এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।”
চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS) চলাকালীন টাটা গোষ্ঠীর কোনও শীর্ষ কর্তা উপস্থিত ছিলেন না। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানিয়েছিলেন, চন্দ্রশেখরণের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তিনি নাকি বলেছিলেন, “সুযোগ পেলেই কলকাতায় এসে দেখা করব।” সেই প্রতিশ্রুতি রাখতেই কি এ বার তাঁর নবান্ন সফর? প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, এ সাক্ষাৎ নিছক সৌজন্য নয়। শিল্প বিনিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে আলোচনার ইঙ্গিত মিলছে।
সিঙ্গুরে টাটা বিতর্কের অধ্যায় পেরিয়ে নতুন সূচনা?
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানা (Tata Motors Factory) নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হয় তীব্র উত্তেজনা। জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পরে সেই আন্দোলন তাঁকে রাজ্যসভার সিঁড়ি চড়াতে সাহায্য করে। যদিও তখন মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছিলেন, তিনি টাটার বিরুদ্ধে নন, বরং সরকারের জোরপূর্বক জমি অধিগ্রহণের বিরোধী। তবুও সেই সময়ে ‘টাটা বয়কট’ কর্মসূচি হয়েছিল সিঙ্গুরে।
চন্দ্রশেখরণ-মমতা বৈঠক ঘিরে শিল্পবৃত্তে আলোড়ন
যে টাটা গোষ্ঠী এক সময় বাংলার মাটিতে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল, আজ তাদের কর্ণধার নিজেই এলেন নবান্নে (Nabann)। প্রশাসনের অনেকের মতে, রাজনীতির বাস্তবতা ও প্রশাসনিক প্রয়োজনের নিরিখে এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মমতা (Mamata Banerjee) এখন তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক তিক্ততা ভুলে রাজ্যের শিল্প ভবিষ্যৎ (Industrial Future) গড়তেই এমন সাক্ষাৎ বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা হয়নি, তবে সরকারের তরফে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়েছে স্পষ্টভাবে।
আরও পড়ুনঃ ‘বেদ-উপনিষদ পড়ব, চাষবাস করব’—অমিত শাহের মুখে কি অবসরের ইঙ্গিত?
তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে ভিডিও ও ছবি প্রকাশের পরই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। রাজ্যের বিরোধীরা বলছেন, “শুধু ছবি নয়, বরং বৈঠকের বিষয়বস্তু জানানো হোক।” তবে শাসকদলের বক্তব্য, সরকার সর্বদা শিল্পবান্ধব ছিল, আছে এবং থাকবে। অতীত ভুলে বাংলার উন্নয়নই এখন আসল লক্ষ্য।