বাংলা হান্ট ডেস্ক: পুজোয় বেড়াতে যাবেন ভাবছেন। তোড়জোড় এখনই শুরু করে দিন। পুজোয় বেড়াতে যেতে হলে জুলাইতেই ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে। আর কম খরচে পাহাড়ি গ্রামে ছুটি কাটাতে চাইলে আজই প্ল্যান করুন সোরেং (Soreng)। পশ্চিম সিকিমের (Sikkim) কোলে অবস্থিত এক অচেনা গ্রাম সোরেং। এই জায়গাটি এখনো পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে খুব বেশি পরিচিতি পায়নি। তবে ভিড় এড়িয়ে সিকিমের (Sikkim) জনজীবন উপভোগ করতে ঘুরে আসুন সোরেং থেকে। সিকিমে ঘুরে পৌঁছে যেতে পারেন সোরেং। শান্ত নির্জন একটি পাহাড়ি গ্রাম। হোমস্টেতে বসে উপভোগ করা যায় তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তার দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে পারেন ঘন্টার পর ঘন্টা সময়। আর দূরেই হাতছানি দিচ্ছে বরফে ঢাকা পর্বত শ্রেণি।
সিকিমের নতুন অফবিট স্পট সোরেং (Sikkim)
সোরেং (Soreng) মূলত চারটি গ্রাম নিয়ে গঠিত। চাকুং, সোরেং, শ্রীবাদাম, মঙ্গলবারে নিয়ে সোরেং জেলা। পুজোর সময় ৫-৭ দিনের সিকিম ঘুরতে যাওয়ার প্লান করলে একবার ঘুরে আসতেই পারেন এই গ্ৰামটি থেকে। এই গ্ৰামে রয়েছে গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাদের বাড়িতে থাকার সুবিধে। এমনকি যারা স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজম করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য অন্যতম জায়গা সোরেং। এখানে রয়েছে একাধিক মনাস্ট্রি। এছাড়াও এখানে আপনি জঙ্গলের ভিতরে ক্যাম্পিং, ট্রেকিং, মাউন্টেন বাইকিং, এটিভি রাইডস, হর্স রাইডিং, বোল্ডারিং-এর মতো একাধিক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেরও স্বাদ নিতে পারবেন। এমনকী পশ্চিম সিকিমের এই পর্যটন কেন্দ্রে বার্ড ওয়াচিং এবং প্যারাগ্লাইডিং করার সুযোগও রয়েছে।
কোথায় কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন?
চাকু্ং থেকে শুরু করুন সোরেং (Soreng) ঘোরা। চাকু হল একটি ছোট গ্রাম। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রোথাক নদী। এমনকি এইখানে একটি ওয়াচ পাওয়ারও রয়েছে। যেখান থেকে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘার সূর্যোদয় দেখতে পারবেন। চাকুংয়ে একদিন কাটিয়ে দ্বিতীয় দিন পৌঁছে যান সোরেং-এ।সোরেং গ্রামটি চাকুং থেকে বেশ বড়। তাই এখানে ঘোরার জায়গাও অনেক। এখানে ঝান্ডি দারা ভিউ পয়েন্ট, চুলি দারা, চাঙ্গে জলপ্রপাত, গুমবা দারা মনাস্ট্রি, সিঙ্গা দেবীর মন্দির ইত্যাদি ঘুরে দেখতে পারেন। এ ছাড়াও প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে যেতে পারেন সোরেং-এর জঙ্গলে। পাশাপাশি এখানেই রয়েছে বার্ড ওয়াচিং-এর সুযোগ। এছাড়াও, এখানে জঙ্গলের মধ্যে ক্যাম্পিং বা হাইকিং করতে চাইলে দু’রাত কাটাতে পারেন সোরেং-এ।
সোরেং ঘুরে তৃতীয় বা চতুর্থ দিন পৌঁছে যান শ্রীবাদামে। এখানে রয়েছে ফুন্টসক মনাস্ট্রি, পালয়ুল মনাস্ট্রি, ২০০ বছরের পুরোনো ভুটিয়া হেরিটেজ হাউস, চামকো পোখরি, শ্রীবাদাম লেক, ঋষি জলপ্রপাত, শ্রীবাদাম জলপ্রপাত, রামে ধাম ভিউ পয়েন্ট এবং ঘন পাইনের জঙ্গল।শ্রীবাদামের ঘুরে শেষে ঘুরতে যান মঙ্গলবারেক। মঙ্গলবারেতে ঘুরে দেখুন গাদি ধাম, মাঙ্কোমানা ধাম, লুনটসে মনাস্ট্রি, তামাং মনাস্ট্রি ইত্যাদি। মঙ্গলবারের অন্যতম আকর্ষণ হলো এখানকার উষ্ণ প্রস্রবণ। তাই সোরেং ট্রিপে ঘুরে দেখতেই হবে ফু চা চু হটস্প্রিং এবং লো খাদো সাং ফো কেভ। মঙ্গলবারের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে ঋষিখোলা। এই নদীর তীরে বসে সময় কেটে যাবে।
কী ভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন?
পশ্চিম সিকিম (West Sikkim) যেতে গেলে জোরাথাং পার করেই যেতে হয়। এমনকি নিউ জলপাইগুড়ি (New Jalpaiguri) থেকে শেয়ার গাড়ি করে দার্জিলিং বা মেলি হয়ে পৌঁছে যান জোরাথাং। জোরাথাং থেকে সোরেং যাওয়ার গাড়ি পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সোরেং পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা। এ ছাড়া গ্যাংটক বা পেলিং থেকেও সোরেং যাওয়া যায়। এখানে আপনি গ্ৰামের মানুষদের সাথে একসঙ্গে থাকতে পারেন। অথবা হোমস্টেতে থাকতে পারেন।