বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। কলেজের নাম তিন জায়গায় তিন রকম! এই ‘অসঙ্গতি’ তুলে ধরেই রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে আঙুল তুললেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। পাল্টা লাভলি বললেন, “হাফপ্যান্ট মন্ত্রীর মুখে এসব মানায় না!” গোটা ঘটনায় ফের উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি।
কোথাও সেন্ট পল্স, কোথাও গোয়েঙ্কা! তথ্য বিভ্রাটে ঘনাচ্ছে বিতর্ক
বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) রবিবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করেন, তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতায় (Educational Qualification) রয়েছে ‘বিস্ময়কর অসঙ্গতি’। সরকারি নথি বলছে তিনি ২০২০ সালে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Netaji Subhas Open University) থেকে বিএ পাশ করেন। অথচ তাঁর প্রচারপুস্তিকায় লেখা সেন্ট পল্স কলেজ (St Paul’s College)! এমনকি বিধানসভার পরিচিতি পুস্তিকায় আবার লেখা ‘গোয়েঙ্কা কলেজ’, যেখানে ইতিহাস বিষয় নেই বলেই দাবি সুকান্তের। সেই সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি লেখেন, “এই দল (Trinamool Congress) ক্ষমতায় থাকলে শিক্ষার মান কোথায় পৌঁছবে, তা সহজেই বোঝা যায়।”
‘ছাপার ভুল’, দায় নিতে নারাজ লাভলি
সুকান্তর (Sukanta Majumdar) পোস্টের জবাবে লাভলি পাল্টা তোপ দিয়ে বলেন, “আমি শুনলাম, হাফপ্যান্ট মন্ত্রী আমার বিষয়ে পোস্ট করেছেন!” লাভলির (AITC MLA) দাবি, মনোনয়নপত্রে তিনি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন যে, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি স্নাতক পাশ করেছেন। বাকিদের হাতে থাকা নথিতে যদি অন্য কিছু লেখা থাকে, সেটা ‘ছাপার ভুল’ (Printing Mistake)। লাভলি স্পষ্ট বলেন, “আমি জানি না কে কোথায় কী ছেপেছে। দায়িত্ব আমার নয়।”
অভিনয়ের ব্যস্ততায় কলেজ ছেড়েছিলেন লাভলি। শিক্ষাগত ডিগ্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “সেন্ট পল্স কলেজে আমি পড়তাম ঠিকই। তবে অভিনয়ের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারিনি।” এও বলেন, “গোয়েঙ্কা কলেজে আমি কোনও দিনই পড়িনি। ওটা কীভাবে এল জানি না। হতে পারে ছাপার ভুল।” সেই প্রসঙ্গে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে—তাহলে বিধানসভার নথিতে ভুল তথ্য কীভাবে গেল? তা হলে কি তথ্য যাচাই না করেই তৈরি হয় এমন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পুস্তিকা?
আরও পড়ুনঃ নাবালিকাকে দিঘায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ জামাইবাবুর! ধরা পরে যা বললেন…
রাজনৈতিক বারুদের গন্ধে শিক্ষার ময়দান
বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল (Trinamool Congress) ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে (Education Sector) দুর্নীতি বেড়েছে। ছাত্র রাজনীতি থেকে শিক্ষক নিয়োগ—প্রতিটি স্তরে প্রশ্ন উঠেছে স্বচ্ছতা নিয়ে। লাভলির ঘটনায় সেই অভিযোগ নতুন করে সামনে এল বলেই দাবি শাসক বিরোধীদের।
তবে তৃণমূল (Trinamool Congress) শিবিরের বক্তব্য, “এটা নিছক ছাপার ভুল। এর মধ্যে রাজনীতি টানার মানে নেই।” কিন্তু বিতর্ক এখন আর শুধু তথ্য বিভ্রাটে আটকে নেই—এটা হয়ে উঠেছে তৃণমূল বনাম বিজেপি-র শিক্ষা যুদ্ধ।