বাংলা হান্ট ডেস্ক : ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3) সফল হওয়ার পর থেকেই সারা বিশ্বজুড়ে ভারতের জয়জয়কার। গোটা দুনিয়ার সামনে এক নজিরবিহীন উদাহরণ স্থাপন করেছে ইসরো (Indian Space Research Organisation)। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই বছরের শুরুতেই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিল এক্সপোস্যাট।
এই স্যাটেলাইটটিকে মহাকাশে পাঠানো হয় পিএসএলভি-সি৫৮ রকেটে করে। উৎক্ষেপণের মাত্র ২২ মিনিট পরই স্যাটেলাইটটি পৌঁছে যায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরত্বে ৬ ডিগ্রি হেলে থাকা নির্দিষ্ট কক্ষপথে। এই স্যাটেলাইটটির দুটি পেলোড রয়েছে। যার একটি হল পোলারিমিটার ইনস্ট্রুমেন্ট ইন এক্স-রেজ বা পোলিক্স এবং অপরটি হল এক্স-রে স্পেকট্রোস্কোপি অ্যান্ড টাইমিং বা এক্সস্পেক্ট।
জেনে গর্বিত হবেন যে, এই অভিযানের পেছনে রয়েছে বাংলার এক কৃতী সন্তানের অবদান। এখন তিনি বেঙ্গালুরু নিবাসী হলেও তার ছোটবেলা কেটেছে উত্তরবঙ্গের ইসলামপুরে। তিনি হলেন ‘রামন রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিশ্বজিৎ পাল (Biswajit Pal)। রায়গঞ্জ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন বিশ্বভারতী থেকে। পিএইচডি করেছেন টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ থেকে।
আরও পড়ুন : নতুন বছরে চরম হয়রানি সুন্দরবনে, আটক ১ হাজারের বেশি মানুষ
পিএইচডি সম্পূর্ণ করার পর তিনি যোগ দেন বেঙ্গালুরুর ‘রামন রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এ। আজ সেই বিশ্বজিৎ পাল-ই হলেন নয়া অভিযানের নেপথ্য কারিগর। এই অভিযান প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ পাল জানিয়েছেন, কসমিক এক্স-রে’র পোলারাইজেশন নিয়ে গবেষণায় সাহায্য করবে এই অভিযান। উল্লেখ্য, এই বিষয়ে গবেষণার জন্য ইসরোর তরফ থেকে এটা দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ।
সূত্রের খবর, ২০০৬ সালেই এই অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। এরপর প্রায় ১০ বছর লাগে এই প্রস্তাব অনুমোদন হতে। মাঝের সময়টায় পেলোডের প্রোটোটাইপ মডেল তৈরি করা হয়। এরপর পরীক্ষাগারে সেই মডেল ব্যবহার করে প্রমাণ করা হয় যে এই পেলোড মহাকাশে পাঠিয়ে গবেষণা বাস্তবসম্মত। এরপর ২০২১ সালের মধ্যেই এই পেলোড মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়। তবে অতিমারির কারণে সেই কাজ অনেকটাই পিছিয়ে যায়। তবে এবার তা বাস্তবায়িত হয়েই গেল।
আরও পড়ুন : সাবধান! জাপান ছাড়াও ভূমিকম্প ভারতে, ২৪ ঘণ্টায় ১৫৫ বার কাঁপল মাটি! মৃত ১২
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, কোনও নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে সেটি তার নিজের মাধ্যাকর্ষণের টানে ধ্বংস হয়ে যায়। এবং সেটি বললায় নিউট্রন স্টার বা ব্ল্যাক হোলে পরিণত হয়। একথা সকলেই জানেন যে, ব্ল্যাক হোলের মুক্তিবেগ এতটাই বেশি যে সেটি সবকিছুকে নিজের মধ্যে টেনে নেয়। যেটি নিয়ে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। আর ইসরোর এক্সপোস্যাট উপগ্রহ এই বিষয়েই গবেষণা চালাবে।