বাংলা হান্ট ডেস্ক: নিজের একটা বাড়ির শখ সকলের থাকে। কিছু কিছু সময় আর্থিক অথবা অন্যান্য কারণের জন্য কেনা হয়ে ওঠে না বাড়ি। আবার অনেকে হোম লোন (Home Lone) তুলে নিজের বাড়ি করে। এমন অনেক সময় দেখা যায় হোম লোনের থেকে নানান রকম সমস্যায় পড়তে হয় বলে মনে করে অনেকে। এমনকি এই হোমলোন নিয়ে নানা বিধান নিয়ম-কানুন রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃক বারেবারে জানানো হয় নাগরিকদের সচেতনের জন্য।
হোম লোন সম্পর্কে এই ভুল ধারণা নেই তো আপনার? (Home Lone)
এখনো বেশ কিছু ভুল ধারণা এখনো পোষণ করে সাধারণ মানুষ। এই ভুল ধারণার কারণে বড় বড় আর্থিক সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় খরচ বেড়ে যেতে পারে আপনার। আপনি যদি বাড়ি কেনার বা বাড়ি বানানোর কথা ভাবেন, পাশাপাশি হোম লোন নেওয়ার কথা ভাবেন তাহলে হোম লোন নেওয়ার আগে এই ভুল ধারণা গুলি দূর করে নিন।
১) নিখুঁত ক্রেডিট স্কোর ছাড়া লোন মেলে না: হোম লোন নেওয়ার আগে অনেকে মনে করেন ৭৫০ বা তার বেশি ক্রেডিট স্কোর না থাকলে ব্যাঙ্ক লোনের অনুমোদনই দেয় না। এই চিন্তাটা ভুল। তবে এটা ঠিক যে ভাল ক্রেডিট স্কোর থাকলে ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু অনেক সময়
ঋণদাতা ব্যাঙ্ক ৬৫০ ক্রেডিট স্কোরেও ঋণ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সুদের হার কিছুটা বাড়ে।
২) শুধু ব্যাঙ্ক থেকেই পাওয়া যায় হোম লোন: অনেকে মনে করেন হোম লোন নিতে হলে কেবলমাত্র ব্যাঙ্ক থেকেই পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ব্যাঙ্কেই আবেদন করতে হবে। কিন্তু এই ধারনাটি ভুল। নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল সংস্থা এবং হাউজিং ফিনান্স সংস্থাগুলিও দ্রুত হোম লোনের আবেদন মঞ্জুর করে থাকে। এক্ষেত্রে ঋণের অনেক কাস্টমাইজড বিকল্প পাওয়া যায়। পাশাপাশি অনেক ফ্লেক্সিবিলিটি থাকে।
৩) নির্দিষ্ট সুদের হারে লোন নিলেই সুবিধে: অনেকে মনে করেন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার সময় ফিক্সড ইন্টারেস্ট রেটে নিলেই সুবিধে হবে। যা পরে সুদের হার বাড়লেও তাঁর ইএমআই বাড়বে না। এই বিষয়েটি একেবারে ভুল।
কারণ আগামী দিনে সুদের হার কমলে সেই সুবিধে আপনি পাবেন। তবে আগামী কয়েক বছরে বাজারের গতি প্রকৃতি অনুধাবন করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
৪) পেনাল্টি ছাড়া আগাম ঋণ শোধ করা যায় না: পেনাল্টি ছাড়া আগাম ঋণ শোধ করা যায় না, এই চিন্তা বহু মানুষের আছে। তবে, আরবিআইয়ের নির্দেশিকা অনুসারে, ব্যাঙ্কগুলি কোনও ব্যক্তির অ-ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নেওয়া ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটের হোম লোনে ফোরক্লোজার কিংবা প্রি-পেমেন্টের চার্জ বাতিল করেছে।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষদের জন্য সুখবর! এবার ৯ ক্যারেট সোনায় বসবে হলমার্কেং, নিয়ম লাগু কেন্দ্রের
৫) ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পরে সুদের হার আর বদলায় না: ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পরে সুদের হার আর বদলায় না এই ধারনাটিও ভুল। কেউ যদি ফিক্সড ইন্টারেট রেটে ঋণ নিয়ে থাকে। তবেই তার সুদের হারে কোনও বদল হবে না। কিন্তু ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটে সুদ নিলে, তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট বাড়ানো বা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সুদের হারও কমবে অথবা বাড়বে।
৬) কেবল বেতনভোগী ব্যক্তিরাই ঋণ পান: এই কথা ঠিক যে বেতনভোগী ব্যক্তিদের জন্য ঋণ পাওয়ার সুবিধা অনেকটাই বেশি। কিন্তু একজন সেলফ এমপ্লয়েড ব্যক্তিরা ঋণ পাবেন না, তা নয়। সেলফ এমপ্লয়েড ব্যক্তিদের জন্য ব্যাঙ্ক আলাদা ঋণের সুবিধে দিয়ে থাকে। শুধুমিত্র সেই ঋণ মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে নথি যাচাই করা হয়।
৭) দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নেওয়া ভাল কারণ এতে ইএমআই কম থাকে: ধন নিয়ে অনেকের মাথায় কাজ করে যে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নেওয়া ভালো। কারণ, ঋণের ইএমআই হিসেব করার সময় ঋণের মেয়াদ যত বাড়ানো হয় ততই ইএমআই কমতে থাকে। যারফলে মাসিক খরচের দিক থেকে দেখলে অনেক সুবিধে হয় নাগরিকের। কিন্তু এই ইএমআই থাকার পরেও মেয়াদ বাড়ার কারণে আপনাকে অনেক বেশি টাকা সুদ হিসেবে দিতে হবে ব্যাঙ্ককে। তাই যত তাড়াতাড়ি আপনি আপনার ঋণ মেটাবেন তত আপনাকে সুদ কম দিতে হবে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য। হোম লোন সংক্রান্ত তথ্যের জন্য আপনারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)