বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সেই শুরু থেকে কড়া রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে নানা সময়ে একাধিক মন্তব্যও শোনা গিয়েছে তার মুখে। কখনও ‘ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব’, তো কখনও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী ভাল কাজ করছেন।’ তবে এই সব মন্তব্যই ছিল এজলাসে বসে। আর এবার এজলাসের বাইরেও রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তুললেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অপসারণ দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল মুখপাত্র সুদীপ রাহা। সর্বোচ্চ আদালতে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। সেই নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে বিচারপতি বলেন, “আমাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে যদি সুপ্রিম কোর্টে চিঠি পাঠিয়ে থাকেন, তো ভাল কথা। আমাকে সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা আগেও হয়েছে। এসব নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কিন্তু আমার একটা ভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে।”
এরপর সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নাম শোনা যায় বিচারপতির মুখে। বলেন, “একজন নেতা হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত সম্পত্তি কোথা থেকে আসে? তিনি একটা হলফনামা দিয়ে ঘোষণা করবেন যে তার সম্পত্তির পরিমাণ কত? যদি সেটা তিনি সোশাল মিডিয়ায় সেটা পোস্ট করতে পারেন তাহলে তার সমতুল নেতারা যারা রয়েছেন যেমন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বা অন্যরা, তাদের কাছেও একই অনুরোধ রাখব”।
বিচারপতি এও বলেন, তিনি একজন সাধারণ মানুষ হিসাবেই এই রাজনৈতিক নেতাদের কত সম্পত্তি রয়েছে তা জানতে চান। উল্লেখ্য, বাংলার ইতিহাসে এই ঘটনা একেবারেই নজিরবিহীন। এর আগে কখনও হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে এই ভাবে কোনও রাজনৈতিক নেতাকে এজলাসের বাইরে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ছোবল বসাবে শীত! আজই হুড়মুড়িয়ে তাপমাত্রা কমবে দক্ষিণবঙ্গের এই ৭ জেলায়: আবহাওয়ার খবর
নিজের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া চিঠি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিচারপতি বলেন, ‘ওদের অসুবিধা হচ্ছে। আমার একাধিক পদক্ষেপে ওদের বিভিন্ন চোরেরা জেলে রয়েছেন। আরও কিছু জেলে যাবেন। তাই আমার উপর এত রাগ।’’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘যে ভাবে দুর্নীতির তদন্ত আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে, তাতে মাঝে মাঝে মনে হয়, কোন দিন দেখব, একদল চোরও বিরাট বিরাট উকিল দাঁড় করিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বলবে, আমরা চৌর্যবৃত্তি করে বাঁচি। আমাদের বিষয় সম্পত্তি সবই চুরি করে করা। যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় আমাদের জীবন এবং জীবিকার অসুবিধা হবে। সুতরাং সেটা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১ ধারাকে লঙ্ঘন করবে। আমাদের অবাধে চুরি করার অধিকার দেওয়া হোক। যদি এই রকম আবেদন কোনওদিনও আদালতে হয় তাহলে অবাক হব না।