বাংলা হান্ট ডেস্ক: সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে প্রায় শ’খানেক গ্রামবাসীর রোষাণলের মুখে পড়তে হয় ইডি (Enforcement Directorate) কর্তাদের। রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) তদন্ত করতে গিয়ে রক্ত ঝরেছিল ইডির। মাথা ফেটেছিল ইডি অফিসারদের। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও সশস্ত্র গ্রামবাসীর সামনে কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছিলেন তারা। তারপর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে রাজ্যের প্রতিক্রিয়া চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে শাহজাহান শেখের খোঁজে লুকআউট জারি করেছে পুলিশ। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্যপাল এবং বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা। অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay) বলেন, “বাংলার একটা জায়গায় জনবিস্ফোরণ হয়েছে। এবার সারা দেশে জনবিস্ফোরণ হবে।”
শোভন দেবের এই মন্তব্যের পর থেকেই ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। তবে কি শাসকদল বলতে চাইছে, যা ঘটেছে তা ন্যায় সঙ্গত? প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এদিকে শোভন দেবের এই মন্তব্যের ব্যাখা দিতে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “শোভনদেববাবু যা বলেছেন সেটা বাংলার মানুষের চিন্তাভাবনার প্রতিফলনের কথা বলেছেন, যা নির্বাচনে দেশজুড়ে হতে চলেছে। কোনও হিংসাত্মক কথা বলেননি।’
আরও পড়ুন : ‘আমাকে মা ডাকত, এখনও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে’, রশিদ খানের মৃত্যুতে আবেগপ্রবণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
যদিও সন্দেশখালির প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে কৃষিমন্ত্রী বেশ স্পষ্ট কথাতেই বলেছেন, ‘এরপর ইডি-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি তদন্তে এলেই জনবিস্ফোরণ হবে। এখন তো সবে একটা জায়গায় হয়েছে। এরপর সারা বাংলাজুড়ে জনবিস্ফোরণ এবং ভারতের যে সকল রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় নেই সেখানে হবে। যেখানে বিজেপি সরকারে আছে সেখানে ইডি দুর্নীতি দেখতে পাচ্ছে না। শুধু ইডি বলেই নয়, যে যাবে সেখানে তাতেই জনবিস্ফোরণ হবে।’
আরও পড়ুন : ED-র উপর হামলার জের, এবার কড়া হল অমিত শাহের দফতর! রাজ্যের কাছে চাইল স্পষ্ট জবাব
এখানেই থেমে না থেকে তিনি আদানি-আম্বানির প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘শেখ শাহজাহান নেই তো কী হয়েছে! তার দাদু আছে। আদানি, আম্বানি আছে। ক্যাগ রিপোর্ট বলছে, মোদি সরকারের আমলে কেন্দ্রে ৫.৭ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার কাছে শাহজাহান কে? শাহজাহান ধোপে টেকে?’ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্যের পর থেকেই সুর চড়াতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। যদিও কুণাল ঘোষের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, কৃষিমন্ত্রী যা বলেছেন তা হিংসাত্মক নয়। ইডি নাকি কেবল শাসকদলের নেতাদের বাড়িতেই হানা দিচ্ছে বলেই নাকি বাংলার মানুষ খেপে উঠেছে।