বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি কয়েক বছরে সাবমেরিন-রোধী যুদ্ধ (ASW) হেলিকপ্টারগুলি যেকোনও দেশের নৌবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যুদ্ধের ক্ষেত্রে ASW হেলিকপ্টারগুলি নৌবহরে বিস্তৃত নাগাল, দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সেন্সর প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এমতাবস্থায়, পাকিস্তান (Pakistan) তার নৌবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির জন্য চিন থেকে হারবিন Z-9EC ASW হেলিকপ্টার কিনেছিল। মূলত, পাকিস্তান এর মাধ্যমে তার নৌবহরের, বিশেষ করে F-22P জুলফিকার যুদ্ধজাহাজের শক্তি বৃদ্ধির আশা করেছিল। তবে, ফলাফল হয়েছে ঠিক বিপরীত। পাকিস্তান নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিবর্তে, Z-9EC তাদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চিনের কাছ থেকে হেলিকপ্টার কিনে সমস্যার সম্মুখীন পাকিস্তান (Pakistan):
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পাকিস্তানের (Pakistan) Z-9EC হেলিকপ্টারগুলি বিভিন্ন মিশনে ধারাবাহিকভাবে খারাপ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। মূলত, জাহাজে থাকার সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেট না হওয়া থেকে শুরু করে রোটার ব্লেড এবং টেইল রোটারের ব্যর্থতা সামনে এসেছে। এছাড়াও, দুর্বল সাবমেরিন শনাক্তকরণ ক্ষমতা এবং সামুদ্রিক প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব পাকিস্তান নৌবাহিনীর সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
পাক নৌবাহিনীর সামনে চ্যালেঞ্জ: এমতাবস্থায়, চিনা Z-9 প্ল্যাটফর্মের ভার্সন হারবিন Z-9EC-কে নিয়ে পাকিস্তানি (Pakistan) নৌবাহিনী ক্রমাগত সমস্যায় পড়েছে।Z-9EC হেলিকপ্টারগুলির সঙ্গে সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হল পাকিস্তান নৌবাহিনীর F-22P জুলফিকার-শ্রেণি ফ্রিগেটের সঙ্গে ইন্টিগ্রেট না হওয়ার ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার ফলে অভিযানের সময় গুরুত্বপূর্ণ ASW ফাংশনগুলি অকেজো হয়ে পড়েছে।
২০০৬ সালে পাকিস্তান চিনের কাছ থেকে সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধে পারদর্শী Z-9EC হেলিকপ্টার কিনেছিল। মূলত, ভারতীয় সাবমেরিন শনাক্ত করার জন্য এই হেলিকাপ্টার কেনা হয়। চিন জানিয়েছিল Z-9EC হেলিকপ্টারে পালস কম্প্রেশন রাডার থেকে শুরু করে ল-ফ্রিকোয়েন্সি সোনার, রাডার ওয়ার্নিং রিসিভার এবং ডলার নেভিগেশন সিস্টেম রয়েছে। তবে, এই হেলিকপ্টার ওই মান পূরণ করতে পারেনি। যার ফলে পাকিস্তান (Pakistan) নৌবাহিনীর সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধের শক্তি হ্রাস পায়।
আরও পড়ুন: চোটের কারণে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ! এবার ৫ কোটির মামলায় নাম জড়াল ভারতের তারকা অলরাউন্ডারের
রয়েছে একাধিক সমস্যা: এই হেলিকপ্টারগুলির আরও বড় সমস্যা হল রোটার ব্লেড এবং টেইল রোটার। এর ফলে হেলিকপ্টারগুলির উড়ানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়েছে। যার ফলে এই হেলিকপ্টারগুলির পরিচালনায় বাধা তৈরি হয়েছে। এই ত্রুটিগুলি পাকিস্তান নৌবাহিনীকে সীমিত ফ্লাইট রেঞ্জ আরোপ করতে বাধ্য করেছে। যার ফলে Z-9EC-র গতি, উচ্চতা এবং মিশনের সময়কালের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: একবার নয়! এশিয়া কাপে তিনবার মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান? সূচি সামনে আসার পরেই মিলল উত্তর
এদিকে, Z-9EC হেলিকপ্টারগুলির ত্রুটির কারণে পাকিস্তান নৌবাহিনী সাবমেরিন হুমকি, বিশেষ করে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবমেরিন বহর মোকাবিলা করতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের ভূপৃষ্ঠের নৌবহর ওমান উপসাগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অথবা করাচি ও গোয়াদরের কাছে প্রধান জাহাজ চলাচলের পথে সাবমেরিন আক্রমণের আশঙ্কায় ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।