বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় রয়েছে, যদি কারোর স্বপ্নপূরণের জন্য আবেগ এবং জেদ থাকে সেক্ষেত্রে তিনি শত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও নিজের লক্ষ্যে (Success Story) ঠিক পৌঁছে যান। আর এই আপ্তবাক্যই পুরোপুরি মিলে যায় নিশা উন্নিরাজনের সঙ্গে। নিশার সংগ্রামের কাহিনি কোনও সিনেমার স্ক্রিপ্টের চেয়ে কম নয়। তিনি ৩৫ বছর বয়সে তাঁর সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতির সফর শুরু করেছিলেন। সাধারণত যেই বয়সে দাঁড়িয়ে অধিকাংশজন কেরিয়ার নিয়ে লড়াই করার কথা ভাবতেও পারেন না সেই সময়েই নিশা তাঁর স্বপ্নপূরণের সিদ্ধান্ত নেন। UPSC-তে ২০২৪ সালে ১০০০ তম স্থান অর্জন করে নিশা প্রমাণ করেন যে, সাহস এবং জেদ থাকলে স্বপ্নপূরণের জন্য বয়স, বাধা এবং পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা যায়।
উদ্বুদ্ধ করবে নিশার সাফল্যের কাহিনি (Success Story):
নিশা ৪০ বছর বয়সে সাফল্য হাসিল (Success Story) করেন। তাঁর দুই কন্যা সন্তান রয়েছে মেয়ে। তারা হল নন্দনা (১১) এবং থানভী (৭)। এদিকে, নিশা কানে শোনার ক্ষেত্রেও সমস্যার সম্মুখীন হন। তবে, সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা UPSC দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। মূলত, স্বামী অরুণের পাশাপাশি নিশা তাঁর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বাবা-মায়ের সহায়তায় পারিবারিক দায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রেখেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন।
নিশার জীবন কেবল বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি তাঁর দুই মেয়েকেও বড় করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন। তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িও বাড়িতে ছিলেন। নিশার স্বামী একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। সকালে বাচ্চাদের স্কুলের জন্য প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে ঘর সামলানো এবং রাতে UPSC-র জন্য পড়াশোনা, এটাই ছিল তাঁর রুটিন। নিশার শিডিউল সবাইকে অবাক করেছে। এমতাবস্থায়, নিশা জানিয়েছেন যে, এই সাফল্যের (Success Story) পিছনে তাঁর পরিবারের অনেক বড় সমর্থন ছিল। তাঁদের সমর্থন ছাড়া এটি সম্ভব হত না বলেও জানান নিশা।
আরও পড়ুন: একাধিক অভিযানে ব্যর্থ! ভারতকে টক্কর দিতে চিনের কাছ থেকে হেলিকপ্টার কিনে “ফেঁসে গেল” পাকিস্তান
সপ্তম প্রচেষ্টায় সাফল্য: নিশা প্রথম ৬ টি প্রচেষ্টায় UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাঁর শ্রবণশক্তির সমস্যাও রয়েছে। তবে, তিনি কখনও এটিকে তাঁর লক্ষ্যের পথে বাধা হতে দেননি। ৬ টি ব্যর্থতার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও, তিনি কখনও হাল ছাড়েননি। নিশা জানান যে, তিনি কখনও ভাবেননি যে তাঁর কোনও প্রচেষ্টা বৃথা গেছে। প্রতিবারই তিনি নতুন কিছু শিখতে পেরেছেন। তাঁর অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রম ২০২৪ সালে পূর্ণতা পায়। সেই বছর তিনি সপ্তম প্রচেষ্টায় ১,০০০ তম স্থান অর্জন করেন এবং IAS হওয়ার স্বপ্নও পূরণ (Success Story) করেন।
আরও পড়ুন: চোটের কারণে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ! এবার ৫ কোটির মামলায় নাম জড়াল ভারতের তারকা অলরাউন্ডারের
এইভাবে পান সাফল্য: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, নিশা তিরুবনন্তপুরমের একটি কোচিং সেন্টার থেকে গাইডেন্স নিয়েছিলেন। কিন্তু নিশার আসল শক্তি ছিল তাঁর অনন্য পড়াশোনার কৌশল। তিনি UPSC-র টপারদের প্রস্তুতির কাহিনি এবং প্রেরণাদায়ক ভিডিও থেকে অনুপ্রেরণা পেতেন। নিশা প্রতিটি বিষয় ছোট ছোট অংশে পড়াশোনা করতেন এবং রিভিশনের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতেন। নোট তৈরি এবং টাইম ম্যানেজমেন্টের দিকে তাঁর সঠিক দক্ষতা তাঁকে এই কঠিন পরীক্ষায় সফল (Success Story) হতে সাহায্য করেছে।