বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খারিফ মরসুমের শুরুতেই রাজ্যের কৃষকদের জন্য বড় ঘোষণা করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের শুরু হল ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের অর্থসাহায্য প্রদান। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৯ লক্ষ কৃষক ও বর্গাদার এবার এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন সামাজিক মাধ্যমে এই প্রকল্পের নতুন দফার সূচনা ঘোষণা করেন এবং কৃষকদের প্রতি রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি আরও একবার তুলে ধরেন।
দুই কিস্তিতে ভাগ করে আর্থিক সাহায্য কৃষকদের
এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের একরপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর এই অর্থসাহায্য দুই কিস্তিতে ভাগ করে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হয়। এমনকি যাঁদের জমির পরিমাণ কম, তাঁরাও অনুপাত অনুযায়ী কমপক্ষে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা পাচ্ছেন। এবারে রাজ্য সরকারের তরফে মোট ২,৯৩০ কোটি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
কৃষকদের মৃত্যুতেও আর্থিক সুরক্ষা
শুধু চাষের জন্যই নয়, কৃষকদের সামাজিক সুরক্ষার দিকেও নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন জানান, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি কোনও কৃষকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এই সুবিধার আওতায় ইতিমধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ ৪৬ হাজার কৃষক পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ২,৯২০ কোটি টাকা।
‘কৃষকরাই বাংলার সম্পদ’, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee)
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) লেখেন, “২০১৯ সালে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু হবার পর থেকে আমরা আমাদের কৃষকদের কাছে মোট ২৪,০৮৬ কোটি টাকা পৌঁছে দিয়েছি। এজন্য আমি গর্বিত! আমাদের সরকার আগামী দিনেও কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় মনে করি, আমাদের কৃষকরা আমাদের সম্পদ, আমাদের গর্ব।”
আরও পড়ুনঃ ‘বাংলায় ফিরে আসুন’, SIR প্রসঙ্গে সংখ্যালঘু শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে খোলা বার্তা মমতার
প্রসঙ্গত, সরকারি স্তরে কৃষকদের জন্য এই প্রকল্পকে রাজ্য সরকারের অন্যতম সফল উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কৃষিপ্রধান বাংলায় এই প্রকল্প একদিকে যেমন কৃষকদের মরসুমি চাষে সুরক্ষা দিচ্ছে, তেমনি দুর্যোগ বা মৃত্যুর মতো দুঃসময়ে পরিবারগুলিকে আর্থিকভাবে রক্ষা করছে। ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্প কার্যকরভাবে কৃষকদের আস্থা ধরে রাখার কৌশল বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল।