বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের রাজ্যের (State Government) ভূমিকায় তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন ঘটনায় মৃতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ পালন করছে না। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলায় ক্ষুব্ধ হয় হাইকোর্ট।
জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যকে বড় নির্দেশ | Calcutta High Court
হাইকোর্টের প্রশ্ন, দীর্ঘদিন যাবৎ কেন এই ক্ষতিপূরণ আটকে রাখা হয়েছে? ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিচারপতি পালের মন্তব্য, “এই ধরনের একাধিক জনস্বার্থ মামলা বছরের পর বছর পড়ে থাকছে। মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীরা হাজিরই হন না। মামলায় রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা অধিকাংশ সময়ই শুনানির সময় অনুপস্থিত থাকেন।”
বিচারপতি বলেন, “এটা হওয়া একেবারেই উচিত নয়।” গুরুত্বপূর্ণ এই মামলাগুলির শুনানিতে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। বিচারপতি পূর্ব অভিজ্ঞতা ভাগ করে আরও বলেন, “তেলেঙ্গানা রাজ্যেও আমার একই অভিজ্ঞতা হয়েছে।”
কী সংক্রান্ত মামলা?
কুলতলির এক নাবালিকাকে বেআইনি ভাবে পাচার হওয়ার হাত থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও রিজেন্ট পার্ক থানা মেয়েটিকে মধুচক্রের কাজে ব্যবহার করার হাত থেকে বাঁচিয়ে আনে। পকসো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হলে ২০২১ সালে নাবালিকাকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যকে।
২০১৭ সালের আইন অনুযায়ী তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। তবে বহুদিন হয়ে গেলেও সেই ক্ষতিপূরণ পায়নি পরিবার। ২০২২ সালে মামলাকারী ক্ষতিপূরণ দাবি জানিয়ে দক্ষিণ 24 পরগনা লিগাল সার্ভিস কতৃপক্ষকে চিঠি দেন। তবে তাতেও সুরাহা না হলে এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল।
শুক্রবার এই মামলা শুনানির জন্য ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। তবে সেখানে রাজ্যের কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এতেই ক্ষুব্ধ হয় হাইকোর্ট। বিচারপতি অন্য মামলায় উপস্থিত থাকা রাজ্যের এক আইনজীবীকে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে জানান। অবিলম্বে যাতে সরকারি আইনজীবীকে মামলার নথিপত্র দেন সেই নির্দেশ জারি করেন বিচারপতি।
রাজ্যকে হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে মেয়েটিকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। দু’সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।