বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি কলকাতা শহরের রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতের নাম দিলীপ সাহা। বয়স আনুমানিক ৭০ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপবাবু দীর্ঘদিন ধরেই এনআরসি (NRC) নিয়ে প্রবল মানসিক চাপে ভুগছিলেন। তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, এই আতঙ্ক তাঁকে ক্রমশ গ্রাস করছিল বলেই দাবি পরিবারের। সেই আতঙ্ক থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বলে অনুমান।
রবিবার সকালে স্বামী ঘুম থেকে না ওঠায় একাধিকবার ডাকাডাকি করেন দিলীপবাবুর স্ত্রী। দীর্ঘক্ষণ কোনও সাড়া না মেলায় পাশের বাড়ি থেকে আত্মীয়াকে ডেকে আনেন তিনি। পরে প্রতিবেশীরাও জড়ো হন। অবশেষে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দিলীপবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সকলে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় রিজেন্ট পার্ক থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
‘বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে’, এই ভয়েই আত্মহত্যা? | NRC Panic
দিলীপ সাহা পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত অশিক্ষক কর্মী ছিলেন। ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি স্কুলে কাজ করতেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, ১৯৭২ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। বর্তমানে থাকতেন রিজেন্ট পার্কের আনন্দপল্লি পশ্চিম এলাকায়।
গত এক সপ্তাহ ধরে একেবারে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন দিলীপবাবু। টিভিতে খবর দেখতেন, কিন্তু কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। বাড়ি থেকেও বেরনো বন্ধ করে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে সক্রিয় তৃণমূল, সোমবার ৯ হাজার নেতা-নেত্রীকে নিয়ে বৈঠক করবেন মমতা
তদন্তে পুলিশ, নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ?
পুলিশ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। তবে এনআরসি (NRC) আতঙ্ক ছাড়াও অন্য কোনও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দিলীপবাবুর আত্মহত্যার পেছনে যে মানসিক অস্থিরতা কাজ করেছিল, তা সুইসাইড নোট এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।