রংমিস্ত্রি থেকে এক লাফে কোটিপতি! কে এই প্রসন্ন রায়? ‘ব্যবসায়ীর’ আসল পরিচয় চমকে দেবে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সদ্য জামিন পেয়েছেন চাকরি বিক্রির ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায় (Middleman Prasanna Roy)। সেই প্রসন্ন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। আবার শাসকদলের একাংশের মতে তিনি নাকি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠও বটে। কারণ তার বাড়িত থেকেই মিলেছিল দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিলের ফোটোকপি। এই প্রসন্ন ঠিক কে? কি তার আসল পরিচয়। এত প্রভাবশালীদের সাথে তার ‘যোগ’ কোন সূত্রে?

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) বৃহস্পতিবার থেকে ফের জোর অ্যাকশনে নেমেছে ইডি। গতকাল সাতসকালে শিক্ষক কেলেঙ্কারি মামলায় সদ্য জামিন পাওয়া ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের মোট ৬টি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযানে নামে ইডি। (Enforcement Directorates)। প্রথমে প্রসন্নর বাড়ি এবং তারপর রাতে তার অফিসে হানা দেয় ইডি। প্রায় ২১ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা।

ইডি এবং সিবিআই সূত্রে খবর, নামে-বেনামে কমপক্ষে ৮০টির উপর সংস্থা রয়েছে প্রসন্নের। বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট সহ নিজের ও স্ত্রীর নামে রয়েছে বিপুল সম্পত্তি। তবে চিরকাল অবশ্য এইরকম রাজার অবস্থা ছিল না প্রসন্নর। শোনা যায় আগে নারকেলডাঙার একটি ছোট্ট ভাড়াবাড়িতেই জীবন কেটেছে প্রসন্নর। নিম্নমধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলের হঠাৎ এই রকম উত্থানের ঘটনা কোনও সিনেমার গল্পের চাইতে কম নয়।

উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দূর সম্পর্কের আত্মীয় এই প্রসন্ন। প্রথম জীবনে রংমিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করলেও, পরে তিনি গাড়ির ব্যবসায় রমরমা হয় তার। শিক্ষা দফতরেও নাকি গাড়ি ভাড়া দিতেন তিনি। গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন নিয়োগ মামলায় ধৃত শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হার অফিসেও।

চাকরি দুর্নীতিতে মিডিলম্যান হিসেবে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে দাবি করে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থা খুলে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার কাজ করতেন প্রসন্ন। তালিকায় ছিল গাড়ি, বাড়ি, হোটেল, নির্মাণ ব্যবসা থেকে শুরু করে চায়ের দোকানও।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, একাধিক ভুয়ো কোম্পানি চালাতে নিজের কর্মচারীদের নামেও সংস্থা খুলে কালো টাকা সাদা করতে বসেছিলেন প্রসন্ন। সিবিআই এর অনুমান, এই সংস্থার কর্মীদের কাজে লাগিয়েই প্রসন্ন টাকার লেনদেন করাতেন। যোগাযোগ রাখতেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আধিকারিকদের সাথে। সিবিআইয়ের অভিযোগ সংস্থার এক কর্মচারীর মাধ্যমে টাকার দিয়ে চাকরি নেবে এমন চাকরিপ্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করেছিলেন। তার পর সেই নাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল শান্তিপ্রসাদের কাছে।

prasanna roy

আরও পড়ুন: বৃষ্টি ভুলে যান! এই দিন থেকে দক্ষিণবঙ্গে অন্য টুইস্ট, শীত নিয়েও তোলপাড় করা খবর দিল আবহাওয়া দপ্তর

সিবিআই এর অনুমান চাকরিবিক্রিতে এজেন্ট এর ভূমিকা পালন করেই কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে প্রসন্নের পকেটে। তবে কার দৌলতে প্রসন্নর এত বারবাড়ন্ত আপাতত সেই প্রশ্নের খোঁজে তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে SSC দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রসন্ন রায়। পরে তাকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতেও হেফাজতে নেয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। যদিও গত ১০ নভেম্বর চাকরি বিক্রির অন্যতম ‘দালাল’ প্রসন্ন রায়কে জামিন দেয় সর্বোচ্চ আদালত। আপাতত জামিনে মুক্ত প্রসন্ন।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর