বাংলা হান্ট ডেস্কঃ GST ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পথে কেন্দ্র। কর কাঠামো সহজতর করার উদ্দেশ্যে সরকার নিয়ে এল GST ২.০ পরিকল্পনা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী গোষ্ঠীর বৈঠকে করের স্ল্যাব কমিয়ে চার থেকে দুই করার সিদ্ধান্তে সম্মতি মিলেছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্রের ‘নেক্সট জেনারেশন GST সংস্কার’-এর অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
GST স্ল্যাব পরিবর্তনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা
এদিন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পুরনো চার স্ল্যাব (৫, ১২, ১৮, ২৮ শতাংশ) বাদ দিয়ে এবার থাকবে মাত্র দুই স্ল্যাব। আগে ১২ শতাংশ করের স্ল্যাবে থাকা ৯৯ শতাংশ পণ্য এখন ৫ শতাংশ করের স্ল্যাবে স্থানান্তরিত হবে। একইভাবে, ২৮ শতাংশ স্ল্যাবের আওতায় থাকা ৯০ শতাংশ পণ্য ১৮ শতাংশের স্ল্যাবে স্থানান্তরিত হবে। এই পরিবর্তনের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে পোশাক, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, টেলিভিশন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সরকারের দাবি, এই সংস্কার সাধারণ পরিবার, কৃষক এবং ছোট ব্যবসায়ীদের উপর থেকে করের চাপ কমাবে। পণ্যের দাম কমলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তর ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, ফলে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তর ক্রয়ক্ষমতা বাড়তে পারে। ফলে পণ্যের চাহিদা বাড়বে। পরোক্ষে বাড়বে উৎপাদন। যা দেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর হতে পারে, এমনটাই মত অর্থনীতিবিদদের একাংশ। অন্যদিকে তামাকজাত দ্রব্যকে রাখা হয়েছে আলাদা ৪০ শতাংশ করের আওতায়, যাকে ‘পাপ পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র।
বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তোলা হয়েছে স্বাস্থ্য ও জীবনবিমাকে GST থেকে অব্যাহতি দেওয়ার। এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে, সাধারণ মানুষকে আর তাদের প্রিমিয়ামের উপর GST দিতে হবে না। তবে এতে বছরে সরকারি রাজস্ব প্রায় ৯,৭০০ কোটি টাকা কমতে পারে বলে খবর সূত্রের। গত বছর এই কর আরোপের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছিলেন। তিনি তখন লিখেছিলেন, “ভারত সরকারের কাছে আমাদের দাবি, জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম থেকে GST তুলে নিন।”
আরও পড়ুনঃ কমিশনের নির্দেশ অমান্য? ২১ অগাস্টের পরও চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিল না রাজ্য
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেই ঘোষণা করেছিলেন, “আমরা নেক্সট জেনারেশন GST সংস্কার আনছি, যা দেশের সর্বত্র করের বোঝা কমাবে। এবছরের দীপাবলিতে আমি আপনাদের জন্য ডবল উপহার নিয়ে আসব।” সেই প্রতিশ্রুতির প্রথম ধাপ হিসেবে নতুন স্ল্যাব কাঠামো অনুমোদন করল কেন্দ্র। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই পদক্ষেপ কর ব্যবস্থাকে সহজ করে যেমন সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আনবে, তেমনই দেশের বাজার ও উৎপাদনে নতুন গতি সঞ্চার করবে।