বাংলাহান্ট ডেস্ক: অবশেষে জামিন পেল প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)।পাকিস্তানের (Pakistan) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ইমরান খানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)। বৃহস্পতিবার আদালতের রায়ে তিনি একসঙ্গে আটটি মামলায় জামিন পান। তবে এই রায় সত্ত্বেও আপাতত তাঁর জেলমুক্তি হচ্ছে না। পাকিস্তানের প্রধান দুটি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ ও ডন এই খবর জানিয়েছে।
জামিন মঞ্জুর ইমরান খানের (Imran Khan)
২০২৩ সালের মে ইসলামাবাদ(Islamabad) হাই কোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় ইমরান খানকে।তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যানের গ্রেফতারে গোটা পাকিস্তান জুড়ে ব্যাপক হিংসার সৃষ্টি হয়।। সরকারি ভবন, সেনা স্থাপনা ও জনসমাগম স্থানে ব্যাপক ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ হয়। এই ঘটনায় পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। ইমরান খানের বিরুদ্ধেও তখন অন্তত ডজনখানেক মামলা রুজু করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ২০২৩ সালের মে মাসের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আটটি মামলায় ইমরান খানকে জামিন দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে তিনি অন্তত কয়েকটি বড় আইনি জটিলতা থেকে সাময়িক স্বস্তি পেলেন। তবে জামিন মানেই যে তিনি সঙ্গে সঙ্গে মুক্তি পাবেন, তা নয়।
পিটিআই-এর বড় ‘জয়’
এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে বড় ‘জয়’ হিসাবেই দেখছে পিটিআই। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে তাদের তরফ থেকে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ‘ইমরান খানের জয়’। পাশাপাশি ইমরানের একটি ভিডিয়োবার্তাও পোস্ট করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওটিতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সবসময় একটা কথা মাথায় রাখবেন। রাত যখন সবচেয়ে অন্ধকার হয়, তার মানেই সকাল হতে আর বেশি দেরি নেই।’’ ইমরান এই বার্তা দিয়েছেন দলের সমর্থকদের উদ্দেশে।
আগেও জামিনের আবেদন ইমরানের
আগে চলতি বছরের জুন মাসের ২৪ তারিখ লাহৌর হাই কোর্ট এই মামলায় ইমরানের জামিনের আবেদন করেন। সেই সময় তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। বৃহস্পতিবার তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ইয়াইয়া আফ্রিদি, বিচারপতি মুহাম্মদ শফি সিদ্দিকি এবং বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান ঔরঙ্গজ়েবের বেঞ্চ আটটি মামলায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে। আগেই আদালত চত্বর থেকে ইমরানের গ্রেফতারিকে সুপ্রিম কোর্ট ‘অবৈধ’ বলেছিল জানিয়েছিল।সেই সময় আবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছিল লাহৌর হাই কোর্ট। তবে তখনও রাষ্ট্রদ্রোহ-সহ একাধিক অন্য মামলায় ইমরানের জেল থেকে মুক্তি হয়নি।
২০১৮ সালের অগস্ট থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ইমরান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। প্রথমে ক্রিকেটার থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া থেকে ইমরান খানকে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ একাধিক মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছ। এখনও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইমরান খানের আইনজীবীরা। দুর্নীতি থেকে শুরু করে সরকারি গোপন নথি ফাঁস সহ একাধিক রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে মামলা এখনও ঝুলে আছে। এগুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁর জেলমুক্তি সম্ভব নয়। যার জেরে জামিন পাওয়া সত্বেও এখনও কার্যত তাঁকে কারাগারেই থাকতে হবে।