বাংলা হান্ট ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) আগেই বড় ঝটকা খেল বাংলা। একদিকে যেখানে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য সেখানে শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধ করতে হচ্ছে সরকারকে (Government Of West Bengal)। শিক্ষকের সংখ্যা নাকি এতটাই কমে গেছে যে, স্কুলের পঠন পাঠন চালু রাখাই দায় হয়ে পড়েছে। আর সেই কারণেই তালা ঝোলাতে হল রাজ্যের একাধিক স্কুলে।
সূত্রের খবর, হাওড়ার (Howrah) ডোমজুড়ের মাকড়দহের একটি স্কুলের পঠন-পাঠন বন্ধ করা হয়েছে। ডোমজুড় ব্লকের অন্তর্ভুক্ত মাকড়দহ ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় পায়রাটুঙী গ্রামের নামেই পায়রাটুঙী মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি হয় ২০০৩ সালে। ঐ গ্রামেরই কিছু সহৃদয় ব্যক্তির উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল এই স্কুল। তবে এবার শিক্ষক অভাবে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এই স্কুল।
ইতিমধ্যেই ট্রান্সফার সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের হাতে। স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। যে মাঠে কচিকাঁচারা খেলাধুলা করছে সেই মাঠে নাকি এখন গবাদি পশু চরছে বলে খবর। এইদিন স্কুল বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে শেখ জাহির নামক এক ব্যক্তি বলেন, ‘স্কুল তো ভালই চলত। গ্রামের প্রায় তিনশো জন ছেলেমেয়ে পড়ত। একসময় এই স্কুলে অনেক নেতা মন্ত্রী এসেছিলেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন অনেক। কিন্তু সব এখন বৃথা।’
আরও পড়ুনঃ নয়া রূপে সজ্জিত হচ্ছে দমদম! মিলবে অত্যাধুনিক পরিষেবা, এত কোটি টাকা খরচ করছে রেল
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে ছয় জন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন। ২০১৮ সালের পর থেকে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কমতে কমতে শেষে একজনে ঠেকেছে। নতুন করে আর নিয়োগ হয়নি। তাই বন্ধ করে দেওয়া হল।’ এতদিন পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হত, তবে মাধ্যমিক পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
এই প্রসঙ্গে স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্র তাজ মহম্মদ বললেন, ‘খুবই খারাপ লাগছে।’ ওদিকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তনুশ্রী কর্মকার এই বিষয়ে জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তিনি বিধায়ক ও প্রশাসনকে অবগত করবেন। ওদিকে বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘স্কুলটি সর্ব শিক্ষা মিশন প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। এখন আর নেই। তবে শিক্ষা মন্ত্রীকে আমি আবেদন করেছি যাতে স্কুলটি খোলা যায়।’
আরও পড়ুনঃ বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ, অশান্ত বিধানসভা চত্বর, লাঠিচার্জ পুলিশের
স্কুল বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে সিপিআইএম হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘গোটা রাজ্যে অনেক প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হয়েছে। সবই বন্ধ হয়েছে। শুধু লুটে খাওয়ার জায়গাগুলো থাকবে।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেবল হাওড়া নয়, গোটা বাংলাতেই এই একই অবস্থা। কমবেশি অনেক স্কুলই পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে।