বাংলাহান্ট ডেস্ক:- ফের একবার ভারত পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজেই নিজের গুণগান গাইলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। এর আগেও তিনি দাবি করেছিলেন তাঁর মধ্যস্থতার কারণেই দুই দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এদিন তিনি আরও একবার দাবি করলেন যুদ্ধ বিরতির আলোচনার জন্য মোদিকে (Nrendra Modi)ফোনও করেছিলেন তিনি। যদিও তাঁর এই সকল দাবি আগের বারের মতোই এবারও পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে ভারত।
মোদিকে ট্রাম্পের ফোন (Donald Trump)
ভারত-পাকিস্তান(India-Pakistan) সংঘর্ষবিরতি প্রসঙ্গে ফের নিজের কৃতিত্ব দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা চলাকালীন হঠাৎই ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর মধ্যস্থতার ফলেই দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর কথায়, “মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে এত বিদ্বেষের কারণ কী? পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়ে যায়।”
আরও পড়ুন:-সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার পর এবার ভারতের মাস্টারস্ট্রোক! ঘুম উড়ল শরিফের
ট্রাম্পের আরও দাবি, শুধু কূটনৈতিক কথোপকথন নয়, ভারত ও পাকিস্তানকে তিনি কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষায়, “আমি বলেছিলাম, আপনারা যদি পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন, তা হলে আমেরিকা কোনও বাণিজ্যচুক্তি করবে না। উল্টে আপনাদের উপর এত বেশি শুল্ক চাপানো হবে যা কল্পনার বাইরে।” ট্রাম্প বলেন, এই অবস্থানই ভারত ও পাকিস্তানকে দ্রুত সংঘর্ষবিরতিতে বাধ্য করেছিল।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত ৬ মে সামরিক অভিযান চালায়। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত সেই অভিযানে একাধিক পাক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয়। এর পর টানা চার দিন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ চলতে থাকে। অবশেষে ১০ মে সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়। প্রথমেই সেই ঘোষণা ট্রাম্পের তরফ থেকে আসে এবং তখন থেকেই মার্কিন প্রশাসন বারবার এই যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব নিজেদের বলে দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন:- মঙ্গলে পিছিয়েছে DA মামলা, চূড়ান্ত শুনানি কবে? রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য সামনে বড় আপডেট
তবে নয়াদিল্লি ধারাবাহিকভাবে ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে। ভারত সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, সংঘর্ষবিরতির সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের কোনও টেলিফোনালাপ হয়নি। যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ভারত-পাকিস্তানের নিজস্ব উদ্যোগেই নেওয়া হয়েছিল। তবে পাকিস্তান ভিন্ন অবস্থান নেয়। ইসলামাবাদ প্রকাশ্যে আমেরিকার ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে ধন্যবাদ জানায় ট্রাম্প প্রশাসনকে।
Bভারত যেখানে ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ করে আসছে, পাকিস্তান সেখানে তা মান্যতা দিচ্ছে। ফলে সংঘর্ষবিরতিকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক অঙ্কে ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশের তরফে। আর ট্রাম্প, যিনি প্রায়ই আন্তর্জাতিক সঙ্কটে নিজের ভূমিকাকে সামনে আনেন, তিনি ফের একবার ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে মধ্যস্থতার কৃতিত্ব দাবি করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন।