বাংলাহান্ট ডেস্ক: শুল্ক যুদ্ধের আবহে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে চিনের। একইভাবে নতুন করে চিন-আমেরিকা(China-America Rivalry) সংঘাতও বেড়েছে। এবার ভারতের(India) সঙ্গে বন্ধুত্বের মাশুল উশুল করতে চাইছে আমেরিকা (America)। চিনের(China) ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকা।
চিন আমেরিকা সংঘাত তুঙ্গে (China-America Rivalry)
আমেরিকা ও চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধের আবহ ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে। সোমবার হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন, প্রয়োজনে তিনি চিনের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপাতে পারেন। এমনকি প্রয়োজনে “চাইলেই চিনকে ধ্বংস করে দিতে পারে আমেরিকা”—এই মন্তব্য করতেও পিছপা হননি তিনি। যদিও একইসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর উদ্দেশ্য বেজিঙের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা নয়, বরং বাণিজ্য ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা।
আরও পড়ুন:- মৃত্যুপুরী গাজায় ৫ সাংবাদিক-সহ ২১ জনের নির্মম হত্যা! তীব্র নিন্দা জানাল ভারত
ট্রাম্পের কথায়, “চিনের হাতে কিছু তাস রয়েছে, আমাদের হাতেও অসাধারণ কিছু তাস আছে। তবে আমি সেই তাস খেলতে চাই না। যদি খেলি, তা হলে চিন ধ্বংস হয়ে যাবে।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, উদ্ভূত শুল্ক সংঘাতের জেরে চিন যদি আমেরিকার জন্য চুম্বক রফতানি বন্ধ করে দেয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই আগেভাগেই বেজিংকে সতর্ক করেছেন তিনি।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিশ্ববাজারে চুম্বক রফতানির ক্ষেত্রে প্রায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে চিনের হাতে। ‘সিএনবিসি’-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈশ্বিক বাজারে চুম্বক রফতানির প্রায় ৯০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে বেজিং। শুল্কযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চিন সাময়িকভাবে চুম্বক রফতানির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। তবে জুন মাস থেকে আবারও সেই রফতানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চুম্বক রফতানি বৃদ্ধি পায় ৬৬০ শতাংশ এবং জুলাইয়ে তা আরও ৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন:-আগেভাগেই সতর্ক করেছিল ভারত! ভয়াবহ বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে পাকিস্তান, ক্রমশ বাড়ছে সঙ্কট
অন্যদিকে, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আমেরিকার হাতেও সমান শক্তিশালী “তাস” রয়েছে। তাঁর দাবি, চিন যখন আমেরিকাকে চুম্বক দেওয়া বন্ধ করেছিল, তখন ওয়াশিংটনও বোয়িং বিমানের যন্ত্রাংশ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল। এর ফলে চিনের অন্তত ২০০টি বিমান মাটিতে দাঁড়িয়ে ছিল। এই দাবি সামনে এনে তিনি বেজিঙকে বোঝাতে চেয়েছেন, পাল্টা চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা সমানভাবে আমেরিকার হাতেও রয়েছে।
বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দর কষাকষি চলছে। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহেই চিনা প্রতিনিধিদল আমেরিকায় গিয়ে বৈঠক করতে পারে। এই আবহে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহলের মতে, আলোচনার টেবিলে বসার আগেই চিনকে চাপে রাখতে এবং মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় ট্রাম্পের এই মন্তব্য একপ্রকার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।