বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আগামী ৩০ আগস্ট তিয়ানজিনে সম্পন্ন হতে চলা সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে সফর করবেন। সেই সময় তিনি চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সাক্ষাৎ নানা দিক থেকেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিষয়ে চলমান আলোচনার মধ্যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর চিন সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হবে।
জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মোদী (Narendra Modi):
আগামী ৩১ অগাস্ট অর্থাৎ রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী (Narendra Modi) এবং জিনপিং-এর সাক্ষাৎ ঘটবে। বিগত কয়েকবছরে ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা গেলেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরের ফলে সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সম্প্রতি চিন ভারতকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়াও, চিন ভারতকে টানেল বোরিং মেশিনের পাশাপাশি রেয়ার আর্থ মেটিরিয়ালও সরবরাহ করবে।
১৯৫০ সালে ভারত ও চিনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়: উল্লেখ্য যে, ১৯৫০ সালের ১ এপ্রিল ভারত ও চিনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। কিন্তু ১৯৬২ সালের সীমান্ত সংঘাত সেই সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলে। ১৯৮৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর চিন সফরের মাধ্যমে সম্পর্ক ফের সঠিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরবর্তীতে, ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সফরের ফলে বিশেষ প্রতিনিধি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায় এবং পরবর্তীতে ২০০৫ সালে চিনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের ভারত সফর দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত ও সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে উন্নীত করে।
এদিকে, ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ভারত সফর ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ঠিক তার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর (Narendra Modi) চিন সফর এই গতি বজায় রেখেছিল। ২০১৮ সালে উহান এবং ২০১৯ সালে চেন্নাইতে শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে দুই দেশ পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করেছিল। তবে, ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাতে (LAC) উত্তেজনা এই সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। পরবর্তীকালে ২০২৪ সালে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সময় মোদী এবং জিনপিংয়ের দেখা হলে এই সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়।
আরও পড়ুন: “পহেলগাঁও হামলা ভুলিনি”, ভারত-পাক ম্যাচের প্রচার করায় নেটিজেনদের তীব্র নিন্দার সম্মুখীন শেহবাগ
যদিও, ওই সফরের আগে, এই দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ২০১৬ সালে G20 হ্যাঁঝউ, এবং BRICS গোয়া, ২০১৭ সালে BRICS জিয়ামেন, ২০১৮ সালে SCO কুইংডো, ২০১৯ সালে SCO বিশকেক এবং G20 ওসাকার মতো অনুষ্ঠানে দুই দেশের নেতারা মিলিত হন। ২০২২ সালে G20 বালিতেও একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: “দলীপ ট্রফি খেলতে পারছি অথচ…”, এশিয়া কাপে টিম ইন্ডিয়ায় সুযোগ না পেয়ে কী জানালেন মহম্মদ শামি?
ভারত-চিন সম্পর্ক দেখে বিরক্ত আমেরিকা: বর্তমানে ভারত-চিন সম্পর্ক দেখে রীতিমতো বিরক্ত আমেরিকা। ইতিমধ্যেই হোয়াইট হাউসের পরামর্শদাতা পিটার ন্যুভারো প্রধানমন্ত্রী মোদীর (Narendra Modi) আসন্ন চিন সফরকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসন দেখানো চিন কীভাবে এখন বন্ধু হল?” পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন যে, “চিন এবং রাশিয়া কখনোই ভারতের বন্ধু হতে পারে না।” এদিকে, ট্রাম্প রাগের বশে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু তিনি চিনকে শুল্কের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিলেন। এই আবহেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর চিন সফরের দিনক্ষণ সামনে এসেছে।