বাংলাহান্ট ডেস্ক:- সদ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন সফর সেরেছেন, এরই মধ্যে পাকিস্তানের (Pakistan) উপরে চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বেজিং (Beijing)! এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে কূটনৈতিক মহলে। পাকিস্তানের বহু প্রতীক্ষিত করাচি- পেশোয়ার রেল উন্নয়ন প্রকল্প বা এমএল-১ থেকে আপাতত সরে দাঁড়িয়েছে চিন। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বদলে যাচ্ছে আঞ্চলিক সমীকরণ?
বদলাচ্ছে চিন পাকিস্তানের সমীকরণ (Pakistan)
দশকের পর দশক অর্থাভাবের কারণে থমকে রয়েছে এমএল-১ প্রকল্প। প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ খাইবার পাখতুন প্রদেশ হয়ে করাচি থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত। বর্তমানে ওই রেলরুটে চলাচল করা গেলেও বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে তা কার্যত অযোগ্য। শেহবাজ শরিফের (Shehbaz Sharif) নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান (Pakistan) সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চিনের কাছে ঋণ চাইছিল। কারণ, এমএল-১ প্রকল্প আসলে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (CPEC) অংশ, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (BRI) একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। ফলে বেজিংয়ের আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক বলেই মনে করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন:-উৎসবের আবহে লাফিয়ে বাড়ল সোনার দাম, ক্রেতাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ, আজকের লেটেস্ট রেট
কিন্তু হঠাৎ করেই পরিস্থিতি বদলাল। নিক্কেই এশিয়ার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের (Pakistan) এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (ADB) প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। যে অঙ্কের ঋণ আসার কথা ছিল চিনের কাছ থেকে, সেটি আসছে এডিবির তহবিল থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ইসলামাবাদ কেন হঠাৎ করে চিনকে এড়িয়ে এডিবির সাহায্য নিচ্ছে? একাংশের মতে, বেজিং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আপাতত এমএল-১ প্রকল্পে তারা আর অর্থ ঢালবে না।
এই অবস্থার মধ্যেই নতুন করে সামনে এসেছে ভূরাজনৈতিক সমীকরণ। ভারতের কড়া বিরোধিতা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে চিন-পাকিস্তান (Pakistan) অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল বেজিং। কারণ, এই করিডরের একটি বড় অংশ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যা ভারতের সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন বলে মনে করে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক বারবার এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তাই চিনের এই সরে আসা ভারতের জন্য কূটনৈতিক সাফল্য বলেই ধরে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
আরও পড়ুন:-দশ বছরের প্রতীক্ষার অবসান! অবশেষে ১২৪১ উচ্চ প্রাথমিক প্রার্থীর পক্ষে বড় রায় ঘোষণা করল হাই কোর্ট
যদিও এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো তাড়াহুড়ো হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বেজিং এখনও পুরোপুরি ভাবে সিপেক থেকে সরে আসেনি। তবে এমএল-১ রেল উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলে চিন তাদের অবস্থান বদলাতে পারে। তবে আপাতত পাকিস্তানকে (Pakistan) কার্যত হতাশ করল বেজিং।
অর্থাৎ, পাকিস্তানের (Pakistan) ‘ড্রিম প্রোজেক্ট’ এমএল-১ এর ভবিষ্যৎ এখন কার্যত অনিশ্চয়তার মুখে। আর সেই অনিশ্চয়তার নেপথ্যে কি মোদী-ম্যাজিকই বড় ভূমিকা নিল? সেই উত্তর হয়তো দেবে আগামী দিনের কূটনীতি।