নতুন “প্যাঁচ”! ভারতের ওপর শুল্ক চাপিয়ে ইউরোপের দেশগুলির কাছে রুশ তেল না কেনার বার্তা ট্রাম্পের

Published on:

Published on:

Donald Trump asks Europe to not to buy Russian oil.

বাংলা গান ডেস্ক: বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) পশ্চিমা জোটের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসেন। এই আলাপচারিতায় ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, ইউরোপকে (Europe) অবিলম্বে রাশিয়ার (Russia) তেল কেনা বন্ধ করতে হবে। হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধ সত্তাকে শেষ করতে হলে সেখানে অর্থায়ন বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এর অংশ হিসেবে ইউরোপীয় নেতাদের শুধু রাশিয়ার ওপর নয়, বরং চিনের ওপরও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, এই বিষয়ে তিনি খুব শিগগিরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।

ইউরোপকে বার্তা ট্রাম্পের (Donald Trump)

অন্যদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের (Donald Trump) সঙ্গে এই আলোচনার পর জানান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় জোট ভবিষ্যতে বিশেষ করে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। একইসঙ্গে তারা চিনের ভূমিকা নিয়েও আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন বলে জানান। তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রাশিয়ার কাছ থেকে বছরে প্রায় ১.১ বিলিয়ন ইউরোর জ্বালানি আমদানি করে। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকেই ইইউ বহু দশকের পুরনো জ্বালানি নির্ভরতা ভাঙতে চাইছে। ইউরোপীয় কমিশন ইতিমধ্যে আইন প্রস্তাব করেছে, যাতে ২০২৮ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়।

আরও পড়ুন:-বিরোধিতা জানিয়েছিল ভারত! এবার পাকিস্তানের বহু প্রতীক্ষিত প্রকল্প থেকে মুখ ফেরাল চিন

উল্লেখ্য, এই প্রেক্ষাপটেই নয়াদিল্লিকে লক্ষ্য করে ওয়াশিংটন রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনার জন্য জরিমানা করেছেন ট্রাম্প (Donald Trump)। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে। তাই ভারতের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর অর্ধেক ২৫ শতাংশকে বলা হচ্ছে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা প্রতিদানমূলক শুল্ক এবং বাকি ২৫ শতাংশকে নিষেধাজ্ঞা হিসেবে আরোপ করা হয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ফেডারেল আপিল আদালত রায় দিয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) যেভাবে প্রায় প্রতিটি দেশের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছেন, তার জন্য তাঁর কোনো আইনগত অধিকার নেই। যদিও আদালতের এই রায়ের পরও আপাতত শুল্ক বহাল থাকবে। ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে। তাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আদালতে দাবি করা হয়েছে, এই শুল্ক আরোপ আসলে একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার অংশ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমেরিকা যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তারই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল ভারতের বিরুদ্ধে IEEPA আইনের আওতায় শুল্ক আরোপ।

Donald Trump asks Europe to not to buy Russian oil.

আরও পড়ুন:- ট্রাম্পের “ঔদ্ধত্যের” যোগ্য জবাব! ডলারকে ঝটকা দিতে “মেগা প্ল্যান” ভারত-চিনের

প্রসঙ্গত, শুরু থেকেই ট্রাম্প (Donald Trump) প্রশাসন ভারতের ওপর শুল্ক আরোপকে শান্তি প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরছে। তবে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একদিকে ইউরোপ রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, অন্যদিকে ভারতকে শুল্ক দিয়ে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে আমেরিকা। আপিল আদালতের রায়ের পর ট্রাম্প প্রশাসন আরও কঠোর মনোভাব নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার জ্বালানি বাজার, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মার্কিন শুল্কনীতিকে ঘিরে নতুন করে এক অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি হয়েছে।