বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুলের উন্নয়নের জন্য সরকার যে টাকা দেয় সেই টাকা খরচ হওয়ার কথা স্কুল উন্নয়নের কাজে। কিন্তু সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের মল্লিকপুর আব্দুস শুকুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাস সরকারের দেওয়া টাকা খরচ করেছেন, তবে স্কুল উন্নয়নের কাজে নয়, ওই টাকা নাকি তিনি খরচ করেছেন ব্যক্তিগত খাতে। অভিযোগ স্কুল উন্নয়নের টাকায় নাকি তিনি বিদেশেও ভ্রমণ করেছেন। এই অভিযোগ উঠতেই আর্থিক অনিয়মের কারণে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করল পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
অডিট না হওয়ার অভিযোগ বারুইপুরের (Baruipur) মল্লিকপুর আব্দুস শুকুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
অভিযোগ অনুযায়ী, প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে বারুইপুরের (Baruipur) ওই স্কুলে সঠিকভাবে অডিট হয়নি। সাধারণত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন নিয়ে বছরে একবার করে অডিট হয়। কিন্তু এই স্কুলে সেই নিয়ম মানা হয়নি। বরং কমিটির রেজোলিউশন ছাড়াই কখনও অডিট করা হয়েছে, আবার বেশ কিছু ফান্ড আদৌ অডিট হয়নি। ফলে কত টাকা কোথায় খরচ হল, তার সঠিক হিসাব মেলেনি। এতে অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সন্দেহ আরও বাড়ে।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শুভাশিস সাহু এর পরেই অভিযোগ করেন যে, গত কয়েক বছরে স্কুল উন্নয়নের জন্য সরকারের দেওয়া টাকার মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা অনিয়মিতভাবে খরচ হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের খরচও রয়েছে। তাঁর দাবি, স্কুলের উন্নয়নের ফান্ড ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক বিদেশে গিয়েছিলেন। অথচ এই ভ্রমণের জন্য কমিটির কোনও অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, স্কুলের টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হল কেন?
শুধু বিদেশ ভ্রমণ নয়, স্কুলের অভ্যন্তরীণ কাজে যেমন- রং করা, বেঞ্চ-টেবিল তৈরির মতো ক্ষেত্রেও আর্থিক তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ। কাজের তুলনায় খরচের অঙ্ক বেশি দেখানো হয়েছে বলে মনে করছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। অভিযোগ জমা পড়ার পরই তদন্ত শুরু করে শিক্ষা দপ্তর। তার ভিত্তিতেই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘ক্ষমা চাইতেই হবে’, মহুয়া ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ মতুয়া মহাসঙ্ঘ
শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে যা অভিযোগ উঠেছে, তা আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই অভিভাবকদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, স্কুলের টাকা স্কুলেই খরচ হওয়া উচিত, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নয়। বারুইপুরে (Baruipur) এই ঘটনা সামনে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।