বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ (Dearness Allowance) মামলায় গত ১৬ মে পঞ্চম বেতন কমিশন অনুযায়ী বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ কার্যকর না করে পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে এসবের মধ্যেই সোমবার শীর্ষ আদালতে শেষ হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি।
ডিএ মামলায় রায়ের অপেক্ষা | Dearness Allowance
বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বিশেষ বেঞ্চে ডিএ মামলার শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ। কারও কোনও বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে জমা দেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে সরকারি কর্মীদের একাংশের মনে প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে ২৫ শতাংশ ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য সেই নির্দেশ অমান্য করায় সরকারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হবে কী?
এই প্রসঙ্গে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ ফেসবুকে এক কমেন্টে লেখেন, ‘মূল মামলার শুনানি হলে অন্তর্বর্তী আদেশ আর কার্যকর হয় না। কারণ অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়া হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে মামলার শুনানি না হওয়ার কারণে। মূল মামলার শুনানি হওয়ার আগেই সেটাকে মেটাতে বলেছিল আদালত। যেহেতু সরকার তা মেটায়নি সেই কারণে মাননীয় বিচারপতিরা মূল মামলার শুনানি দ্রুত শেষ করে দিয়েছেন।’
গত ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরপরই রাজ্য সরকার স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করে। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা শুরু হয়। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে ২৫ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও রাজ্য তা না মিটিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় চায়।
আদালতের কাছে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। আর্থিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আবেদন ছিল, আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। পাশাপাশি জানানো হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ৪ অগস্ট থেকে ৭ অগস্ট প্রতি দিনই টানা শুনানি চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। তারপর দুদিন শুনানি পিছিয়ে গেলেও সোমবার চূড়ান্ত শুনানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মমতার মন্তব্যের জের! অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তাদের আবেদনে সায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট
প্রসঙ্গত, বহু টানাপোড়েনের পর ডিএ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আদালত সূত্রে খবর, দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে লিখিত আকারে তাঁদের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টে জানাতে হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীরা রাজ্যের জবাবের প্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য জানাবেন। তার তিন সপ্তাহ পর লিখিত জবাব দেখবে আদালত। তারপর ডিএ মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা। মনে করা হচ্ছে অক্টোবরের শুরুতেই রায়দান করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।