বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একাধিক ঘটনা নিয়ে তপ্ত আবহে শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) পৌঁছেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা (National Human rights commission)। সকালেই মহিলা প্রতিনিধিদের একটি টিম এলাকায় পৌঁছে যান। তাদের সঙ্গেই রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সূত্রের খবর, এলাকার মহিলাদের সঙ্গে তারা কথা বলেন। ওদিকে মানবাধিকার কমিশনের এই সফরের মধ্যেই ফের নতুন করে উত্তেজনা সন্দেশখালিতে। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের অনুগামীর মাছের ভেড়ির আলাঘরে আগুন লাগিয়ে দিলেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
শুক্রবার সকাল থেকেই রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে সন্দেশখালি। গণবিক্ষোভে উত্তপ্ত গোটা এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি সংলগ্ন বেড়মজুরের ঝুপখালিতে শাহজাহানের ভাই সিরাজ ডাক্তারের একের পর এক ভেড়ি ভাঙচুর করেন গ্রামবাসীরা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সিরাজের অফিসেও। আর এদিনও সেই ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি। এদিন কাছাড়ি এলাকায় শাহজাহানের অনুগামী তৈয়েব খানের মাছের ভেড়ির আলাঘর পুড়িয়ে ফেলেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, এলাকার মানুষের জমি দখল করে মাছের ভেড়ি করেছিলেন এই তৈয়েব। কাউকে কোনও টাকাপয়সা দেওয়া তো দূর উল্টে টাকা চাইতে গেলে কপালে জুটত হুমকি।
ওদিকে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি ও তোয়াব মোল্লার ভেড়ির আলাঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী। সকাল থেকেই লাঠি, ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নেমেছেন এলাকার মহিলারা। ভোটদানে বাধা, জমি দখল, তোলাবাজি সহ আরও একাধিক অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তারা। জ্বলছে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি ও তোয়াব মোল্লার ভেড়ির আলাঘর।
এই সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন সকাল থেকেই উত্তপ্ত গোটা এলাকা, সেই সময়ই সন্দেশখালি পৌঁছেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুদিন আগেই বিবৃতি দিয়ে সন্দেশখালি পরিদর্শনে আসার কথা জানিয়েছিল মানবাধিকার কমিশন। সেই মতই এদিন সকালে তারা পৌঁছে যান। বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনের সদস্যেরা।
আরও পড়ুন: শাহজাহানের নয়া দুর্নীতির খোঁজ! সকাল থেকে ৬ জায়গায় ED-র ম্যারাথন তল্লাশি
সন্দেশখালিতে পৌঁছেই প্রথমে থানায় গিয়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন মহিলা ও তিনজন পুরুষ। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। গোটা পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছেন তারা।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে সন্দেশখালিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ভিত্তিতেই একাধিক পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে মানবাধিকার কমিশন। সন্দেশখালিতে মহিল, পুরুষ সকলকে হেনস্থা করা হয়েছে। শিশু এবং বয়স্কদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। মহিলাদের উপর নির্যাতন ও যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তারা সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছে। একাধিকবার পুলিশ, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও সুরাহা মেলেনি। পায়ের ওপর পা তুলে বসে ছিল পুলিশ। সংবাদমাধ্যমের একাধিক রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমার এবং মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিককেও নোটিস দিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।