১,১০০ কিমি দূর থেকেই সমুদ্রে তীক্ষ্ণ নজর! ভারতের এই শহরে প্রস্তুত নৌবাহিনীর “সুপার ব্রেন সেন্টার”

Published on:

Published on:

Navy's super brain center INS Aravali ready in this Indian city.

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় নৌবাহিনী এবার ইতিহাস তৈরি করেছে। প্রথমবারের মতো দেশে এমন একটি নৌঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে, যা সমুদ্র থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে থাকা সত্ত্বেও ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই নতুন ঘাঁটির নাম হল INS আরাবল্লি (INS Aravali)। যেটি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী গুরুগ্রামে (হরিয়ানা) কমিশন করবেন।

রিপোর্ট অনুসারে, গুরুগ্রাম থেকে নিকটতম সমুদ্র উপকূল, অর্থাৎ গুজরাটের কান্দলা বন্দর প্রায় ১,১৪৮ কিলোমিটার দূরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে পারে যে সমুদ্র থেকে এত দূরে অবস্থান করেও কীভাবে একটি নৌঘাঁটি দেশের উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে? এর উত্তর হল আধুনিক প্রযুক্তি এবং তথ্য সংক্রান্ত যুদ্ধ ক্ষমতা এদিক থেকে এই নৌঘাঁটিকে (INS Aravali) সমৃদ্ধ করেছে। যেগুলি প্রয়োজনের সময় নৌবাহিনীকে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করে।

INS আরাবল্লির বিশেষত্ব: এই নৌঘাঁটি (INS Aravali) ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য একটি হাই-টেক কোঅর্ডিনেশন এবং ডেটা ফিউশন সেন্টার হিসেবে বিবেচিত হবে। নৌবাহিনীর কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল অপারেশনস, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা মিশন এখান থেকে পরিচালিত হবে। এটি বিশেষভাবে মেরিটাইম ডোমেইন অ্যাওয়ারনেস (MDA) বৃদ্ধির জন্য তৈরি করা হয়েছে। যার অর্থ হল ভারত মহাসাগর অঞ্চলে যেকোনও কার্যকলাপ রিয়েল-টাইমে পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।

Navy's super brain center INS Aravali ready in this Indian city.

নাম এবং প্রতীকের তাৎপর্য: জানিয়ে রাখি যে, এই নৌঘাঁটির (INS Aravali) নামকরণ করা হয়েছে আরাবল্লি পর্বতমালার নামে। যা যুগের পর যুগ ধরে বিদেশি আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারতের ঢাল হিসেবে কাজ করছে। এই নৌঘাঁটির মূলমন্ত্র হল “সমুদ্র সুরক্ষা: সহযোগ”। যার অর্থ সম্মিলিত সহযোগিতার মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা। এছাড়াও, INS আরাবল্লির প্রতীকে থাকা শক্তিশালী পর্বত শক্তির প্রতীক। অন্যদিকে, উদীয়মান সূর্য শক্তি এবং নতুন যুগের বার্তা দেয়।

আরও পড়ুন: সুদূর জাপানে ভারত-পাকিস্তানের জোরদার টক্কর! মুখোমুখি হতে চলেছেন নীরজ চোপড়া-আরশাদ নাদিম

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি: উল্লেখ্য যে, INS আরাবল্লি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে সেটি নৌবাহিনীর সমস্ত তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রকে সংযুক্ত করতে পারে। সেখানে রিয়েল-টাইম তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করা হবে। সামুদ্রিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি, এটি উপকূলীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং গোয়েন্দা বিভাগগুলির সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নেবে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই নৌঘাঁটি (INS Aravali) ভারতের সামুদ্রিক সীমান্তে সম্ভাব্য হুমকিগুলি আগে থেকেই শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন: BCCI-এর নতুন সভাপতি হতে চলেছেন সচিন তেন্ডুলকার? কী জানালেন ক্রিকেটের কিংবদন্তি?

BEL-এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব: ২০২৫ সালের জুলাই মাসে, ভারতীয় নৌবাহিনী ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের (BEL) সঙ্গে একটি ন্যাশনাল মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস প্রোজেক্ট (NMDA) স্বাক্ষর করে। যার লক্ষ্য হল সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য প্রচুর পরিমাণে তথ্য সংগ্রহ করা এবং বিভিন্ন মেরিটাইম স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সেটি ভাগ করে নেওয়া। এই অংশীদারিত্বের সাহায্যে, INS আরাবল্লি (INS Aravali) ভারতের এক ধরণের “সুপার ব্রেন সেন্টার” হয়ে উঠবে। যেটি স্থলে থাকা সত্ত্বেও সমুদ্রের গভীরতা পর্যন্ত নজরে রাখবে।