বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি থেকে এবার মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হবেন জাস্টিস সৌমেন সেন (Justice Soumen Sen)? সুপারিশ করল সুপ্রিমকোর্ট কলেজিয়াম। কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরার বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন বিচারপতি সেন। এবার তাঁকে মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছে শীর্ষ আদালত।
মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন জাস্টিস সেন? Justice Soumen Sen
বিচারপতি সেন সম্পর্কে কলকাতা হাইকোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যে তথ্য আছে তা নিম্নে তুলে ধরা হল: প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৫ সালের ২৭ জুলাই কলকাতায় জন্ম বিচারপতি সৌমেন সেনের। কলকাতার সেন্ট লরেন্স হাইস্কুল থেকে স্কুলিং শেষ করেন তিনি। এরপর ১৯৯০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন বিচারপতি।
জানা গিয়েছে, কলেজে প্রথম স্থান অধিকার করেন বিচারপতি সৌমেন সেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক ও প্রথম স্থান নিয়ে আইন পাস করেন তিঁনি। ১৯৯১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের আওতায় অ্যাডভোকেট হিসেবে তার নাম নথিভুক্ত হয়। আরবিআই, সেবি, এসআইডিবিআই সহ একাধিক বড় বড় মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জাস্টিস সেন। এরপর ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।
নিজের কর্মজীবনে একাধিক নজিরবিহীন রায় দিয়েছেন বিচারপতি সেন। সাম্প্রতিক কালে ওয়াকফ সংশোধনীকে আইনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছিল সেই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে একটি জনস্বার্থ মামলায় মুর্শিদাবাদ এবং প্রয়োজনে গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিচারপতি।
এর আগে বিচারপতি সৌমেন সেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি মামলার সূত্রে বেনজির সংঘাতে জড়িয়েছিলেন। সেই সময় রাজ্যে মেডিকেলে ভর্তি মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সংঘাত তুঙ্গে পৌঁছয়। মামলা থেকে শুরু হয়ে যায় ব্যক্তিগত আক্রমণ। সংঘাতের জল এতটাই গড়ায় যে তা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই ক্রেতাদের স্বস্তি? শনিবার কত হল সোনার দাম? দেখে নিন ক্যারেটের চার্ট
রাজ্যে মেডিকেলে ভর্তি মামলা নিয়ে বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! সেই সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের নির্দেশনামায় লিখেছিলেন, বড়দিনের ছুটির আগে শেষ যে দিন আদালতের কাজ হয়, সেদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে হাইকোর্টে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়ে বিচারপতি সেন বিচারপতি সিনহাকে কিছুটা রাজনৈতিক নেতার মতো নির্দেশ দিয়ে বলেন, তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা রাজনৈতিক ভবিষ্যত রয়েছে। তাই তাকে বিরক্ত করা চলবে না না।
এখানেই শেষ নয়, বিচারপতি সিনহার বেঞ্চের লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করার পাশাপাশি তার বেঞ্চে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যে ২টি মামলা রয়েছে তা খারিজ করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এও অভিযোগ তুলেছিলেন যে বিচারপতি সিনহাই তাকে এই বিষয়ে সবটা জানিয়েছেন। বিচারপতি সেন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি গাঙ্গুলি। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সৌমেন সেনকে বিচারপতির পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত বলে মন্তব্যও করেছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।