বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রতিদিন বহু যাত্রী ভারতীয় রেলওয়ের (Indian Railways) পরিষেবা গ্রহণ করে থাকেন। লোকাল ট্রেন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনে সফর করেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। কেউ কেউ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে, কেউ কেউ আবার কর্মসূত্রেও সফর করে থাকেন ট্রেনে। এমতাবস্থায় এক শহর থেকে আরেক শহরে ঘুরতে গেলেই আলাদা আলাদা ভাবে ট্রেনের (Indian Railways) টিকিট কাটতে হয়। নিছক ভ্রমণ হোক বা কর্মসূত্রে, একাধিক শহরে যেতে হলে টিকিটের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়। এবার এই সমস্যার সমাধানে বড় উদ্যোগ নিল ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railways)।
এক টিকিটেই ভারত ভ্রমণের সুবিধা নিয়ে এল ভারতীয় রেল (Indian Railways)
যাত্রীদের সুবিধার্থে রেল আনল সার্কুলার জার্নি টিকিট। কী এই টিকিটের বিশেষত্ব? আর পাঁচটা সাধারণ টিকিটের সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়? উল্লেখ্য, সাধারণ টিকিট শুধুমাত্র যে স্টেশন (Indian Railways) থেকে কাটা হয় এবং গন্তব্য স্টেশনের ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়। কিন্তু সার্কুলার জার্নি টিকিটের ক্ষেত্রে একটি চক্র রুটে ব্যবহৃত হবে টিকিট। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু হয়ে আবার ওই স্টেশনেই শেষ হবে। মাঝে বিভিন্ন শহরে নামার সুযোগ থাকবে যাত্রীদের।
কী কী সুবিধা মিলবে: উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দিল্লি থেকে শুরু করে কেউ যদি কন্যাকুমারী গিয়ে আবার দিল্লি ফিরতে চান তবে সার্কুলার জার্নি টিকিট কাটতে পারেন। এর মধ্যে তিনি মথুরা, মুম্বই, গোয়া, বেঙ্গালুরু, মাইসুরু, উটি, তিরুবনন্তপুরম মিলিয়ে মোট ৭৫৫০ কিমি পথ কভার করতে পারবেন। মোট ৫৬ দিন সময় লাগবে সেক্ষেত্রে। যাঁরা ভ্রমণ, তীর্থযাত্রা বা ব্যবসার সফরে যাবেন তাঁদের জন্য এই টিকিট কার্যকরী হবে। এই টিকিটে একাধিক জায়গায় নেমে ঘোরার সুযোগ সহ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্টপওভার, ক্লাস আপগ্রেড সহ তারিখ বদলের স্বাধীনতার মতো একাধিক সুবিধা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন : রাত পোহালেই বাজারে ঢুকতে শুরু করবে বাংলাদেশের চওড়া পেটির ইলিশ! কত করে পড়বে দাম?
কী নিয়ম মানতে হবে: মোট দু ধরণের সার্কুলার জার্নি টিকিট রয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড সার্কুলার টিকিট- তীর্থযাত্রা বা টুরিস্ট রুটের ক্ষেত্রে আগে থেকে নির্দিষ্ট করে রাখা টিকিট। নন স্ট্যান্ডার্ড সার্কুলার টিকিট- রেলের নিয়ম মেনে যাত্রীরা চাইলে নিজের মতো করে রুট (Indian Railways) তৈরি করতে পারেন। এই টিকিটের ক্ষেত্রে যাত্রা শুরু এবং শেষের স্টেশন একই হতে হবে। মাঝে সর্বাধিক ৮ বার ব্রেক জার্নি করা যাবে, তবে একবার টিকিট ইস্যু হয়ে গেলে মাঝপথে আর বদলানো যাবে না রুট (Indian Railways)। প্রতিটি আলাদা লেগের জন্য আলাদা আলাদা রিজার্ভেশন করতে হবে। তবে ফার্স্ট ক্লাস, এসি সহ সব শ্রেণির জন্যই প্রযোজ্য হবে টিকিট।
আরও পড়ুন : ঘড়ি ‘থমকে’ ব্লু লাইনে, পরবর্তী মেট্রোর সময় দেখানোই বন্ধ মেট্রোর? চটে লাল যাত্রীরা
মূলত সফরের দূরত্বের উপরে নির্ভর করে সার্কুলার টিকিটের মেয়াদ নির্ধারিত হয়। প্রতি ৪০০ কিমির জন্য ১ দিন এবং প্রতিটি ব্রেক জার্নি অর্থাৎ ২০০ কিমির জন্য অতিরিক্ত ১ দিন ধরা হয়। তবে এই টিকিট সরাসরি বুকিং কাউন্টার থেকে মিলবে না, নিজের সফর পরিকল্পনা জমা করতে হয় যাত্রীদের। ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার বা স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা খরচের হিসাব দেন। এরপর নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করে সার্কুলার টিকিট কাটা যায়। প্রথমে পুরো সফরের দূরত্ব হিসাব করে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হয়, তারপর তা দ্বিগুণ করে হিসাব করা হয় মূল ভাড়া। প্রতিটি আলাদা লেগের জন্য আলাদা রিজার্ভেশন ফি দিতে হয়। প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে মেলে অতিরিক্ত ছাড়। পুরুষ হলে ৪০ শতাংশ, মহিলাদের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড় আর শিশুদের জন্য অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হয়।