বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হুগলির খানাকুলে নাবালিকা খুনের মামলায় বড় মোড়। তন্ত্রসাধনার জন্য নরবলি দেওয়ার অভিযোগে ফাঁসির সাজা পাওয়া সাগরিকা পণ্ডিত এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক নাবালিকার দিদিমাকে সোমবার বেকসুর খালাস দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পুলিশের তদন্তে একাধিক ফাঁকফোকর থাকায় নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা যায় না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে খানাকুলে নিখোঁজ হয় এক নাবালিকা। অভিযোগ ওঠে, তন্ত্রসাধনার জন্য দিদিমা নাতনিকে তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিতের হাতে তুলে দেন। কয়েক দিন পর এক প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। পুলিশ গ্রেপ্তার করে মুরারি, তাঁর স্ত্রী সাগরিকা এবং শিশুটির দিদিমাকে। বিচার চলাকালীন জেলে মারা যায় মুরারি। পরে আরামবাগ আদালত সাগরিকাকে ফাঁসির সাজা এবং দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ
সোমবার শুনানিতে সাগরিকার আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ঘোষ যুক্তি দেন যে, “প্রথমত ধর্ষণের অভিযোগ মহিলা হিসেবে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা যায় না। তা ছাড়া তন্ত্রসাধনার জন্য নরবলি হয় নারী নয়। বলির নিয়ম অনুযায়ী পবিত্র জিনিসেরই বলি হয়। তাই বলির আগে ধর্ষণের তত্ব একেবারেই সঠিক নয়।” এছাড়া শিশুটির দেহ প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হলেও পরে সাগরিকার বাড়ি থেকে যে চটি উদ্ধার হয়, তা যে মৃত নাবালিকারই, তা প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ।
তদন্তে গাফিলতি থাকার অভিযুক্তদের খালাস করল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
এই ঘটনার হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতিরা সম্পূর্ণ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, পুলিশের তদন্তে একাধিক গাফিলতি রয়েছে। এ ছাড়াও দেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে। ঘটনার বহু পরে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তর বাড়ি থেকে বাচ্চাদের চটি উদ্ধার করে বলে দাবি পুলিশের। কিন্তু সেই চটি যে ওই নাবালিকারই, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তাই অভিযুক্তদের খালাস দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ইডির দপ্তরে হাজিরা মিমি চক্রবর্তীর, বেটিং অ্যাপ মামলায় তীব্র চাঞ্চল্য, কী কী প্রশ্ন করা হল?
প্রায় সাত বছর ধরে চলা এই মামলায় নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে অভিযুক্তদের মুক্তি দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। তবে প্রশ্ন থেকেই গেল, আসলে কে খুন করল সেই নাবালিকাকে? আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃতের পরিবার চাইলে নতুন করে তদন্তের দাবি তুলতে পারেন।