বাংলাহান্ট ডেস্ক: ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ়ের খুনে মুখ খুললেন ট্রাম্প (Donald Trump)। আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসনকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে টেক্সাসের ডালাসে এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। খুন হয়েছেন ভারতীয় প্রৌঢ় চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া। ভয়ঙ্কর দিক হল, তাঁর স্ত্রী এবং ছেলের চোখের সামনে তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। অভিযুক্ত প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথা কেটে নেয়, তারপর সেই ছিন্ন মুণ্ড হাতে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে অভিযুক্তকে ছিন্ন মুণ্ডে লাথি মারতে মারতে রাস্তায় হাঁটতে। এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য ভাইরাল হতেই আমেরিকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে।
অবৈধ অভিবাসন নিয়ে কি বললেন ট্রাম্প (Donald Trump)
এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। সোমবার তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার খুনের সাংঘাতিক খবর শুনেছি। ডালাসে তিনি সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানের সামনে তাঁর মাথা কেটে নেওয়া হয়েছে। কাজটা করেছেন এক অবৈধ অভিবাসী, যিনি কিউবা থেকে এখানে এসেছিলেন। কখনও তাঁর আমেরিকায় ঢোকার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল না।”
আরও পড়ুন: টেক্কা দিতে পারল না চিনও! মাত্র ৫ মাসেই ১ লক্ষ কোটি টাকার মোবাইল রফতানি করল ভারত
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ইয়োরডানিস কোবোস-মার্টিনেজ় কিউবার নাগরিক এবং তাঁর কাছে বৈধ অভিবাসনপত্র ছিল না। শুধু তাই নয়, আমেরিকায় ঢোকার পরেও একাধিক অপরাধে তিনি ধরা পড়েছিলেন। শিশুনিগ্রহ থেকে শুরু করে গাড়ি চুরি— নানা অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল আগেও। কিন্তু আদালতের অনুমতিতে তিনি মুক্তি পেয়ে যান। কিউবাও তাঁকে ফেরত নিতে অস্বীকার করেছিল। এর ফলে তিনি মুক্তভাবেই আমেরিকায় বসবাস করছিলেন। ট্রাম্পের (Donald Trump) অভিযোগ, জো বাইডেনের প্রশাসনের অব্যবস্থার জন্যই এমন অপরাধীরা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সাধারণ মানুষকে খুন করছে।
ট্রাম্প (Donald Trump) সরাসরি বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করে বলেছেন, “জো বাইডেনের অপদার্থ সরকার তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি। এই অপরাধী আমাদের দেশে কখনও ঢুকতে পারার কথা ছিল না। অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে নরম হওয়ার দিন এখন শেষ।” তিনি আরও আশ্বস্ত করে লিখেছেন, “আমার প্রশাসনের আধিকারিকেরা ভাল কাজ করছেন। আমেরিকাকে আবার নিরাপদ, সুরক্ষিত করে তোলা হবে। এই অপরাধী আমাদের হেফাজতে রয়েছে। খুনের অভিযোগে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
ঘটনার পটভূমি অনুযায়ী, চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া ডালাসে একটি ছোট হোটেল চালাতেন। সেখানেই কাজ করতেন মার্টিনেজ়। গত ১০ সেপ্টেম্বর হোটেলের ভিতরে কোনও কারণে তাঁদের মধ্যে বচসা বেঁধে যায়। সেই ঝগড়া এতটাই চরম আকার নেয় যে মার্টিনেজ় চন্দ্রকে আক্রমণ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে তাঁর কাণ্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক হাতে ছিন্ন মুণ্ড নিয়ে তিনি রাস্তায় হাঁটছেন, আর তাতে লাথি মারছেন। ভয়াবহ সেই দৃশ্য দেখে আশপাশের লোকজন আতঙ্কে পালিয়ে যান। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ট্রাম্প (Donald Trump)।

আরও পড়ুন:ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ভাঙার চেষ্টায় কেউ কখনও সফল হবে না! স্পষ্ট বার্তা রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর
এই হত্যাকাণ্ডের জেরে আমেরিকায় অভিবাসন নীতি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। ট্রাম্পের (Donald Trump) বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তিনি আরও কড়া অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে ভারতীয় সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আমেরিকায় ভারতীয় দূতাবাস যোগাযোগ রেখেছে। তবে এই ঘটনার পর ভারতীয়দের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার হত্যাকাণ্ড শুধু এক ভয়ঙ্কর অপরাধ নয়, বরং আমেরিকার অভিবাসন ও নিরাপত্তা নীতির দুর্বলতাকেও নগ্নভাবে সামনে এনে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্পের (Donald Trump) ঘোষণার পর আমেরিকার নীতিতে কতটা কঠোর পরিবর্তন আসে।