বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ধাক্কায় পাকিস্তানের মাটিতে জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) বাড়ি কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় সেনার ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় বাহাওয়ালপুরে থাকা জইশের আঁতুড়ঘর। সেই সময় থেকেই শোনা যাচ্ছিল, বিস্ফোরণে মারা গিয়েছে আজহারের পরিবারের অন্তত ১৪ জন সদস্য। এত দিন পর্যন্ত বিষয়টি ‘গুজব’ হিসেবেই ধরা হচ্ছিল। কিন্তু অবশেষে জইশের শীর্ষ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরি এক ভাইরাল ভিডিওতে প্রকাশ্যে স্বীকার করল যে, ভারতীয় সেনার দাপটে তছনছ হয়ে গিয়েছিল আজহারের বাড়ি এবং প্রাণ হারিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
অপারেশন সিঁদুরে খতম আজহারের পরিবার (Masood Azhar)
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, কাশ্মীরির পিছনে সশস্ত্র রক্ষীরা দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে তাকে উর্দু উচ্চারণে বলতে শোনা যায়, “সন্ত্রাসবাদকে কাজে লাগিয়ে দিল্লি, কাবুল ও কান্দাহারের সঙ্গে আমরা দেশের সীমান্ত রক্ষা করেছি। সব কিছু ত্যাগ করার পর ৭ মে মৌলানা মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) পরিবার টুকরো টুকরো হয়ে যায় বাহাওয়ালপুরে ভারতীয় সেনার আক্রমণে।” তার দাবি, সে নিজে প্রাণে বেঁচে গেলেও আজহারের পরিবারের সদস্যদের ছিন্নভিন্ন দেহ চোখে দেখেছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বাংলাহান্ট, কিন্তু সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের শীর্ষ কমান্ডারের মুখ থেকে এমন স্বীকারোক্তি সামনে আসা কার্যত পাকিস্তান জুড়ে আলোড়ন ফেলেছে।
আরও পড়ুন: ১১ বছরেই আমূল পরিবর্তন! মোদী জমানায় কীভাবে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হল ভারত?
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নিতে ৬ মে গভীর রাতে অপারেশন ‘সিঁদুর’ চালায় ভারতীয় সেনা। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর মিলিয়ে মোট ৯টি জায়গায় একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তইবার সদর দপ্তর এবং হিজবুল মুজাহিদিনের গুরুত্বপূর্ণ আস্তানাও একযোগে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এক রাতের মধ্যেই ধ্বংস হয়েছিল বহু জেহাদি ঘাঁটি এবং খতম হয়েছিল অগণিত সন্ত্রাসবাদী। সেই সময়ই জানা যায় এই অভিযানে মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) গোটা পরিবার নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে।
এরপর একাধিক সংবাদমাধ্যমে মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়, যেখানে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল— “আমার পরিবারের সদস্যরা আল্লার আশীর্বাদধন্য হয়েছে। পাঁচজন নিষ্পাপ শিশু, আমার বড় বোন ও তাঁর স্বামী, আমার ভাগ্নে এবং তাঁর স্ত্রী, আমার ভাইপো, প্রিয় ভাই হুজাইফা এবং তাঁর মা, আরও দু’জন প্রিয় সঙ্গী।” বাস্তবে পরিবারের এই পরিনীতির কথা গোপন রেখে ধর্মীয় আবহে মন্তব্য করে বেড়াচ্ছিল এই কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী। কিন্তু এবার তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সংগঠনের শীর্ষ কমান্ডারের মুখে শোনা গেল ভারতীয় সেনার সেই দুঃসাহসিক হামলার বর্ণনা।

আরও পড়ুন: ‘বিদেশিরাও আধার পায়’, ভোটার তালিকা সংশোধনে আধারের যুক্তি মানা যাবে না, নতুন বিতর্ক সুপ্রিম কোর্টে
ভারতীয় সেনার এই হানা যে পাকিস্তানের ভেতরে থাকা সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরগুলিকে কতটা ধাক্কা দিয়েছে, তা ফের একবার প্রমাণিত হল জইশেরই এক শীর্ষ নেতার মুখে। সন্ত্রাস দমনে ভারতের এই পদক্ষেপ কেবল জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভেঙে দিয়েছে তা-ই নয়, পাকিস্তানের মাটিতেও তাদের ভরসার ভিতকে নড়বড়ে করে তুলেছে (Masood Azhar)।