বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিগত দেড়মাস ধরে সংবাদ শিরোনামে রয়েছে সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। অবৈধভাবে জমি দখল থেকে শুরু করে গণধর্ষণের মত অভিযোগ এসেছে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান-শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে। এই তিন মূর্তির দুজন গ্রেফতার হলেও মাস্টারমাইন্ড ‘শাহজাহান’ এখনও পর্যন্ত ‘ফেরার’। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালিতে সাংসদ নুসরতের (Nusrat Jahan) দেখা নেই।
এমনিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের দীপাঞ্চলে এক বারও দেখা মেলেনি তৃণমূল সাংসদের। নির্বাচনের পূর্বে শেখ শাহজাহানের হুডখোলা জিপে দেখা মিলেছিল তার। তারপর থেকে সন্দেশখালিতে কী হচ্ছে আর কী হচ্ছেনা, এসব কোনও কিছুরই খোঁজ খবর রাখেননি এই তারকা সাংসদ। তবে সন্দেশখালির এমন পরিস্থিতিতেও যে তার দেখা পাওয়া যাবেনা একথা ভাবতেও পারেননি দ্বীপাঞ্চলের মানুষজন।
এমন পরিস্থিতিতে গোটা সমাজমাধ্যম জুড়ে চলে কটাক্ষ। ধেয়ে আসে নানা মন্তব্য। এসবের মাঝেই অবশেষে নীরবতা ভেঙ্গেছেন বসিরহাটের সাংসদ। আর তাতেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এইদিন নিজের মতামত দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কিন্তু এখনও পর্যন্ত দলের নির্দেশ মেনে চলি। আমার মনে হয় একটা সিচুয়েশন সন্দেশখালিতে তৈরি হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন কিন্তু প্রত্যেক দিনই স্থানীয়দের সাহায্য পাঠাচ্ছে। আমি নিজে সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। যার যার সাথে যোগাযোগ রাখার কথা নিয়মিতভাবে সেটা আমি করছি।’
আরও পড়ুন : ‘সবটাই …’, পার্থ-অর্পিতার সম্পর্ক নিয়ে নয়া তথ্য আনলেন প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবী! শুনে ‘থ’ সবাই
তবে এরপরেই তিনি যা বলেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে চরম কটাক্ষ। ফের এক দফায় শুরু হয়েছে সমালোচনা। সাংবাদিকের সামনে নুসরত বলেন, ‘আমার সন্দেশখালি যাওয়া বা না যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কেন জানি না। মানুষকে আমি হতাশ না করে বলতে চাই ওখানে একটা সিচুয়েশন চলছে। ১৭৪-এর যে সিচুয়েশনটা আছে, সেখানে আমি যদি যাই সেখানে আমি আরও পাঁচজনকে তো নিয়ে যাব সঙ্গে করে। সেটা আইনের বিরুদ্ধ হয়। আর আমি অবশ্যই এমন কিছু করব না যা আইন-কানুনের বিরুদ্ধাচারণ হবে।’
আরও পড়ুন : লোকসভা নির্বাচনে মোদীর হাতে এল ‘ব্রহ্মাস্ত্র’, বঙ্গ সফরের আগেই CAA বিধির ঘোষণা!
সাংসদের মুখে ‘১৭৪ ধারা’ শুনে আকাশ থেকে পড়ছে আমি জনতা। একজন সাংসদের মুখে থেকে এমন ভুল কি মানা যায়? প্রশ্ন তুলছে নেটিজন। কেউ কেউ তো বলছে, ‘এটা কোনও ভুল নয়। তিনি আসলে জানেনই না কোনটা ‘১৪৪ ধারা’।’ একজন লিখেছেন, ‘সারাদিন রিলস আর টিকটক নিয়ে ব্যস্ত থাকলে কি আর ১৪৪ ধারা সম্পর্কে জানা যায়?’ অপর এক ইউজার লেখেন, ‘তার সন্দেশখালি যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয় কিন্তু টিকটক ব্যান হয়ে গেলে সেটার প্রতিবার করা জরুরী! ‘ছাপরি সাংসদ’।’ অভিনেত্রীর এক পোস্টের কমেন্ট বক্সে এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘সন্দেশখালি গেলেন? কি বলেছেন ১৭৪ ধারা চলছে? ওটা কোন দেশের সংবিধানের নিয়মানুযায়ী?” অভিনেত্রীকে ‘বাংলার কলঙ্ক’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কেউ কেউ। যদিও এটাই প্রথম নয়, এর আগেও একবার বক্তৃতা দিতে গিয়ে নুসরত বলেছিলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষণে। আমরা কটা সিট জিতেছি জানেন? ৩৬ টা সিট জিতেছি। মানে থার্টি ফোর।’ তবে মঙ্গলবার তার ‘‘১৭৪ ধারা’’ মন্তব্যের পর অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদলও।