বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের শিল্পে বড় ধাক্কা দিল রাজ্য সরকার। জ্যোতি বসুর সময় অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল থেকে চালু থাকা শিল্পে ইন্সেন্টিভ দেওয়ার স্কিমটি বন্ধ করে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার। এই স্কিম চালু হয়েছিল বাংলার শিল্পকে সুসজ্জিত করার জন্য। মনে করা হয়েছিল এই প্যাকেজ চালু থাকলে বড় বড় সংস্থা রাজ্যে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। মূলত বাংলাকে শিল্পের গন্তব্য হিসেবে তৈরি করতেই এই প্যাকেট চালু করা হয়েছিল।
কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য সরকার শুধু স্কিম বন্ধই করেনি, বরং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এই প্যাকেজের মাধ্যমে যে টাকা পেত, তারা আর কোনও টাকা পাবে না। মার্চ মাসে এই বিলটি বিধানসভায় পাশ হয় এবং ২ এপ্রিল গভর্নরের অনুমোদনের পর আইন আকারে কার্যকর হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সিদ্ধান্তের পরেই হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে বড় বড় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) এই সিদ্ধান্তের পরেই আলট্রাটেক সিমেন্ট, ডালমিয়া সিমেন্ট, ইলেকট্রোস্টিল কাস্টিং, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ, নুভোকো ভিস্তাসের মতো বড় সংস্থাগুলি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। সংস্থাগুলির অভিযোগ, তারা সরকারের প্রতিশ্রুতি মেনে বাংলায় কারখানা গড়েছে। কিন্তু এখন সরকার কথা না রাখায় তাদের বিশাল ক্ষতি হবে। আদালতে ডালমিয়ার আইনজীবী বলেন, এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের ১৪ ও ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করছে। আগামী ৭ নভেম্বর হাইবিকোর্টে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, শিল্প সংস্থাকে সুবিধা না দিয়ে সেই টাকা প্রান্তিক মানুষের কাজে ব্যবহার করাই ভালো। এছাড়া বিলে আরও বলা হয়েছে যে, “পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ইউনিটগুলোকে আর পশ্চিমবঙ্গ ইসেন্টিভ স্কিম এবং অনুদানের বাধ্যবাধকতার আওতায় রাখবে না। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো চুক্তি, প্রতিশ্রুতি বা রাজ্যের আইনের অধীনে আগের কোনো বকেয়া টাকা , আর্থিক সুবিধা, রাষ্ট্রীয় সমর্থন, ভর্তুকি, সুদ মওকুফ, শুল্ক, ফেরত বা কর ছাড়, কর প্রণোদনা, অগ্রিম বা অন্য কোনো প্রকার শিল্প প্রচারমূলক সহায়তা পাবে না।”
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগে কমে গেল ভাতা! ফিরহাদ হাকিমের সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) এই সিদ্ধান্তের ফলে শিল্প সংস্থাগুলি ক্ষুব্ধ। বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই টাটা বা জিন্দালের মতো বড় সংস্থার নাম করে বাংলায় শিল্প আনার কথা বলেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা বাংলায় বিনিয়োগ আর নিরাপদ মনে করবে না। বিরোধীরা মনে করছেন রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে কার্যত বাংলার শিল্পের ভবিষ্যৎ এবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেল।