বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার (Russia) আগামী রাজনৈতিক নেতৃত্ব কারা গড়ে তুলবেন তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। তাঁর মতে, রাশিয়ার ভবিষ্যৎ তাঁদের হাতেই থাকবে, যারা ইউক্রেন (Ukraine) যুদ্ধের ময়দান দেখেছেন এবং দেশের জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখেছেন। রুশ সংসদ ডুমার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় পুতিন বলেন, যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, প্রাণের ঝুঁকি নিয়েছেন, তাঁদেরই রাজনীতি ও ক্ষমতায় জায়গা দেওয়া উচিত। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এই যোদ্ধারাই ভবিষ্যতে রাশিয়ার দায়িত্ব নেবেন এবং দেশের শাসনভার গ্রহণ করবেন।
রাশিয়ার (Russia) পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে?
রাশিয়ার (Russia) রাজনীতিতে বিরোধী শিবিরের কণ্ঠস্বর অনেকটাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। পুতিনের ঘনিষ্ঠ দল ইউনাইটেড রাশিয়ার দাপট এখন সর্বত্র। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য দেখিয়ে দিচ্ছে যে আগামী দিনে রাশিয়া আরও বেশি জাতীয়তাবাদী ও কঠোর নীতি গ্রহণ করবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, পুতিন-পরবর্তী যুগেও এই চিন্তাধারার প্রভাব রাশিয়ার রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন:মহাকাশ গবেষণায় একাধিক বিশ্বরেকর্ড ভারতের! কবে চাঁদে পাঠানো হবে মহাকাশচারী? জানাল ISRO
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া (Russia), ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। সেই থেকে লক্ষ লক্ষ সেনাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, বন্দিদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে তাঁদেরও যুদ্ধে নামানো হয়েছে। যদিও রাশিয়া সরকারি ভাবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব প্রকাশ করে না, বিবিসি এবং স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত অন্তত ১ লক্ষ ৩০ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। যারা ফিরে আসছেন, তাঁদের অনেকেই শারীরিকভাবে অক্ষম এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এর ফলে দেশে সহিংস অপরাধ, সামাজিক উত্তেজনা এবং মানসিক সমস্যার প্রবণতা বাড়ছে, যা রাশিয়ার জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: করমর্দন বিতর্কে সব সীমা ছাড়াল পাকিস্তান! নিজেই করল নিয়ম লঙ্ঘন, এবার অ্যাকশনে ICC
একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ রুশ নাগরিক সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত এখনও নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি স্থাপনের চেষ্টা চালালেও বড় কোনো সাফল্য মেলেনি। ইতিমধ্যেই রাশিয়া (Russia) ইউক্রেনের প্রায় পাঁচভাগের একভাগ ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে। মস্কো যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়, বরং সরাসরি রাজনৈতিক সমঝোতা চায়। তাদের দাবি, ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এবং কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়। অন্যদিকে কিয়েভের বক্তব্য, রাশিয়া তাদের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিয়ে দেশটিকে পুরোপুরি দখলে নিতে চাইছে।
এই পরিস্থিতিতে পুতিনের ঘোষণা নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা সামনে এনে দিয়েছে। যুদ্ধ থেকে ফেরা সৈনিক ও যোদ্ধাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে আনার পরিকল্পনা শুধু বর্তমান নয়, রাশিয়ার (Russia) ভবিষ্যৎ রাজনীতিকেও দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রভাবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।