নেপালের আগুন থেকে বাঁচাতে সেনার হেলিকপ্টারে করে সরানো হয়েছিল ওলিকে! কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী?

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: নেপালের (Nepal) রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণআন্দোলন। দীর্ঘদিনের দুর্নীতি, অপশাসন, নেতাদের আত্মীয়-স্বজনের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং টাকার আস্ফালনে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল বহু দিন ধরেই। সেই ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয় গত ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের পর। রাস্তায় নামে সাধারণ মানুষ, আর আন্দোলনের পুরভাগে থাকে জেনারেশন জেড বা তরুণ প্রজন্ম। তাদের তেজে কার্যত ভস্মীভূত হয়ে যায় ওলি সরকার। প্রাণ বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে পদত্যাগ করতে হয় এবং তিনি বেশ কয়েকদিন গোপন আস্তানায় ছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। এমনকি তাঁর দেশত্যাগ নিয়েও জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।

প্রকাশ্যে এলেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী (Nepal)

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলন চরমে ওঠার পর প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন ওলি। এরপরই তাঁকে নেপাল (Nepal) সেনার সুরক্ষায় একটি সামরিক ব্যারাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেনার কর্মকর্তারা পরে নিশ্চিত করেন, কমিউনিস্ট পার্টি এর চেয়ারম্যান হিসেবে ওলি ৯ দিন ওই ব্যারাকেই কাটান। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যারাকটি কাঠমান্ডুর উত্তরে শিবপুরী জঙ্গল এলাকায় অবস্থিত ছিল। সেনার বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে তাঁকে রাখা হয়েছিল, যাতে আন্দোলনকারীরা তাঁর নাগাল না পায়।

আরও পড়ুন:৬০ বছরের পথচলার অবসান, মিগ-২১-এর জায়গা নিচ্ছে দেশীয় তেজস

পরবর্তীতে জানা যায়, ওই সামরিক ব্যারাকে থাকার পর ওলি তাঁর ব্যক্তিগত আশ্রয়ে ফিরে যান। যদিও তাঁর সঠিক অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে তিনি ভক্তপুর জেলার গুণ্ডু এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন। এটি নেপালের (Nepal) রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। প্রসঙ্গত, তাঁর আগের সরকারি বাসভবন বলুয়াটার এলাকায় আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেই বিক্ষোভকারীরা আগুন দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এমনকি সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও বিক্ষোভকারীদের অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায়। তখন ওলি সরকারি বাসভবনের ভেতরেই ছিলেন। সেনার তৎপরতায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে তাঁকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

বর্তমানে নেপালে (Nepal) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। কাঠমান্ডু ও আশপাশের জেলাগুলিতে ৯ সেপ্টেম্বর যে ভয়াবহ সহিংসতা হয়েছিল, তার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। ওই দিনের ঘটনায় অন্তত ৭২ জন প্রাণ হারান। ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং হত্যাকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় রাজধানী কাঠমান্ডু। এই দিনটিকে নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনার তালিকায় রাখা হচ্ছে।

Where did the former PM of Nepal take shelter

আরও পড়ুন:রীতি মেনে মহালয়ার আগেই অকালবোধন, ট্যাংরায় দাস বাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা

নেপালের (Nepal) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির এই রহস্যময় অন্তর্ধান এবং সেনা সুরক্ষায় কাটানো সময় নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কেউ বলছেন, তিনি জনগণের রোষ থেকে বাঁচতেই এই কৌশল নিয়েছিলেন, আবার কারও মতে, ওলির এই অবস্থান প্রমাণ করে আন্দোলনের আগুন আসলে কত ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। এখন দেখার বিষয়, অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে স্থিতিশীলতা ফেরায় এবং ক্ষুব্ধ জনগণের আস্থা ফিরে পেতে সক্ষম হয় কি না।