বাংলা হান্ট ডেস্ক: আজকালকার দিনে বহু মানুষ এটিএম (ATM) থেকে টাকা তোলেন। কারণ সাধারণ মানুষ ব্যাংকের পরিবর্তন এখন এটিএম থেকে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলাকেই বর্তমানে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। তবে এর ফলে ব্যাংকের অতিরিক্ত ভিড়ও কমছে। পাশাপাশি উন্নত হচ্ছে গ্রাহক পরিষেবা। তবে এই একটি ছোট্ট ডিজিটাল যন্ত্র অনেক সময় হয়ে উঠছে আপনার অজান্তে বড় শত্রু।
নতুন ফাঁদে গ্রাহক, এটিএমে থার্মাল ইমেজ স্ক্যান করে চুরি পিন (ATM)
এটিএম মূলত একটি ছোট্ট ডিজিটাল যন্ত্র। আদতে এটি স্ক্যানার। এখানে ম্যানুয়াল বা ডিজিটাল কিপ্যাড এর ওপর রাখলেই শেষ ব্যক্তি কোন সংখ্যায় চাপ দিয়েছে তার ছবি উঠবে স্ক্যানারে। তার থেকে জানা যাবে গোপন দরজা খোলার পাসওয়ার্ডটি। এবার এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এটিএম (ATM) ও পিওএস মেশিন থেকে আমজনতার টাকা হাতানোর ফন্দি হাঁটছেন প্রতারকেরা। ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে বেশ কিছু অভিযোগ জামা পরেছে সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে। এর ফলে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ বার্তা ও দিচ্ছেন তারা। এছাড়াও সব রাজ্যে সাইবার বিভাগের সচেতন বার্তা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন ইতিমধ্যে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: যাত্রীদের জন্য সুখবর, মহালয়ায় মেট্রোর আনলিমিটেড অফার ও বাড়তি ট্রেন
পুলিশ এই প্রতারণার নাম দিয়েছে ‘হিট সিগনেচার ক্রাইম’। এই পদ্ধতিতে টাকা হাতানোর ক্ষেত্রে জালিয়াতিদের টার্গেট রক্ষীবিহীন এটিএম গুলি। কিভাবে এই প্রতারণা চলছে, সেই বিষয়ে রক্ষী বিহীন এটিএম এ ঢুকে প্রথমে স্কিমার মেশিনের সাহায্যে গ্রাহকের ডেভিড কার্ডের তথ্য হাতাচ্ছেন প্রতারকেরা। কিন্তু তাতে ও টাকা হাতানো অনেক ঝুঁকি। সেইসব পোহাতে আর রাজী নয় প্রতারকেরা। তাই এবার ইনফ্রারেড রশ্মির বিশেষ স্ক্যানার কিনেছেন তারা। এটিএম মেশিনে ব্যবহার করে গ্রাহক বেরিয়ে যাওয়ার পরেই সেই স্ক্যানার নিয়ে কিপ্যাডের ওপরে রাখছেন প্রতারকেরা। আর তারপরেই যে চারটি সংখ্যার উপর গ্রাহক চাপ দিয়েছেন সেই জায়গাগুলি থার্মাল ইমেজে চলে আসছে।
আর এই ভাবেই সেই সংখ্যাগুলো জেনে যাচ্ছেন প্রতারকেরা। তারপর স্কিমার মেশিনের সৌজন্যে ডেবিট কার্ডের। এবার পিন (PIN) হাতে এসে যাওয়া অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করা আর অসুবিধার থাকলো না। এমনকি এই ঘটনার সম্প্রতি গড়ফা থানায় এলাকার এটিএম থেকে এক প্রবীণ গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা গায়েব হয়েছে। সেই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারীরা।
তাই এই বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থার্মাল ইমেজটি ব্যবহার করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট এর সাহায্যে সঠিক পিন পেয়ে যাচ্ছেন প্রতারকেরা। শুধুমাত্র চারটি নম্বরের থার্মাল ইমেজ বা হিট সিগন্যাল পেলেও সঠিক পিন জেনারেট করা সম্ভব নয়। একাধিক বার ভুল পিন এটিএম মেশিনে দিলে সেই অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তাই এখানেও প্রতারকদের ভরসা এআই (AI)। তাই এসব তথ্য গায়েব হওয়ার থেকে বাঁচার পরামর্শ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা জানান, এটিএম (ATM) ব্যবহার হয়ে গেলে পিন কি-প্যাডের সবকটি সংখ্যার উপর হাত ঘষে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। একই সঙ্গে নিজস্ব লেনদেন ছাড়া ব্যাংকের থেকে টাকা ডেবিট হলে দ্রুত সাইবার ক্রাইমে রিপোর্ট করার ওপর জোর দিচ্ছেন পুলিশ।