বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) ফের জঙ্গি রাজনীতির ছায়া ঘনিয়ে আসছে। আগামী বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের ভাই ইউসুফ আজহারের স্মরণসভার আয়োজন করা হচ্ছে পেশোয়ারের মরকজ শহিদ মাকসুদাবাদে। আপাতত এটিকে বিদায়সভা বলা হলেও, রাজনৈতিক মহলের মতে এর নেপথ্যে রয়েছে আরও গভীর চক্রান্ত। ইউসুফ আজহারকে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ খতম করেছিল। সেই নিহত নেতার স্মৃতিচারণকে সামনে রেখে এবার পাকিস্তানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠছে।
পাকিস্তানে ফের জিহাদের মঞ্চ? (Pakistan)
জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের (Pakistan) ওই স্মরণসভায় জইশ-ই-মহম্মদের বহু শীর্ষ নেতা ও সাধারণ সদস্য উপস্থিত থাকার কথা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সভা আসলে জেহাদি তৈরির এক নতুন মঞ্চ। বিদায়ী অনুষ্ঠানের আড়ালে সংগঠনে নতুন মুখ আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে ‘মুরাবিতুন’ নামক একটি নতুন পরিচয়। আরবি এই শব্দের অর্থ ‘ইসলামিক দেশের রক্ষাকর্তা’। ধারণা করা হচ্ছে, এই নাম ব্যবহার করেই নতুন প্রজন্মকে সংগঠনে টেনে আনা হবে এবং আন্তর্জাতিক চাপ থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করবে পাকিস্তান। গোটা পরিকল্পনার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।
আরও পড়ুন: আমেরিকায় চাকরির স্বপ্নে কি এবার বড় বাধা? ট্রাম্পের নতুন নিয়মে চিন্তা বাড়ল ভারতীয়দের
প্রসঙ্গত, ৬ মে রাতে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর ভারত প্রতিশোধ নেয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে। পাকিস্তান (Pakistan) ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মোট ৯টি জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের সদর দপ্তর, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তইবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিস্ফোরণে মাসুদ আজহারের বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় এবং তাঁর পরিবারের ১৪ জন সদস্য নিহত হন। এই ঘটনা নিয়ে জইশ শীর্ষ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরি পর্যন্ত স্বীকারোক্তি দেন।
এই প্রেক্ষাপটে ইউসুফ আজহারের স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের (Pakistan) উদ্দেশ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক মহলে আশঙ্কা, পাকিস্তান এই সভার আড়ালে আবারও জঙ্গিদের নতুন করে সংগঠিত করছে। বিশেষত আফগানিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় জেহাদিদের সক্রিয় করে তুলতে চাইছে আইএসআই। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান এভাবে আবারও পুরনো রণকৌশল প্রয়োগ করছে—একদিকে শহিদ নেতার বিদায়ী অনুষ্ঠান, অন্যদিকে নতুন জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা।
ফলে পাকিস্তানের (Pakistan) এই সভা যে শুধুই একটি বিদায়সভা নয়, বরং ভারত-বিরোধী জঙ্গি রাজনীতিকে ফের উস্কে দেওয়ার আয়োজন, সেই আশঙ্কাই প্রবল হয়ে উঠছে কূটনৈতিক ও সামরিক মহলে।