খরচ ১৯২১ কোটি! ভোটের আগেই হাজার প্রকল্পের শিলান্যাস মুখ্যমন্ত্রীর, কাদের মুখে ফুটবে হাসি?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের আবহে মঙ্গলবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী । শহরে কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই সভা আয়োজিত হবে। সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে পরশুদিন এই সভা থেকেই প্রায় ১১৯৩টি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে পারেন তিনি। চমকের শেষ এখানেই নয়! পাশাপাশি ৩৭৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হতে পারে বলে খবর।

এই প্রসঙ্গে জেলার এক অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, শিলান্যাস করা হতে পারে এবং উদ্বোধন করা হতে পারে এমন বেশ কয়েকটি প্রকল্পের (Development Projects) একটি তালিকা বানিয়ে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের (রাজ্যে) কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও এই লিস্ট চূড়ান্ত হয়নি। জলদিই তা চূড়ান্ত করা হবে।

সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে মঙ্গলবারের সভা থেকে ৩৭৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, খবর সূত্রের। জানা যাচ্ছে, প্রকল্পগুলি রূপায়ণ করতে প্রায় ৩৫৫ কোটি ১৩ লাখ  ৯৪ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। পাশাপাশি এক হাজারেরও বেশি, প্রায় ১১৯৩টি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্পগুলি রূপায়ণের জন্য মোট প্রায় ১৯২১ কোটি ৮০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে খবর।

মঙ্গলবারের সভার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। মেদিনীপুরের (Medinipur) এই সভা থেকে একাধিক সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা দেওয়া হবে। প্রশাসনের একটি সূত্র মারফৎ খবর, সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে ৫৮ জন উপভোক্তাকে সভামঞ্চে ডেকে সরকারি নানা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হতে পারে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, সবুজসাথী মিলিয়ে প্রায় ৩০টিরও বেশি সরকারি স্কিমের সুবিধা প্রদান করা হতে পারে। বিভিন্ন জেলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) নানান প্রকল্পের যে সকল উপভোক্তারা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে প্রায় ৭০,০০০ জনকে পরশুর সভায় উপস্থিত করানো হবে বলে জানা যাচ্ছে।

আগামী মঙ্গলবার আয়োজিত হতে চলা এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা হাজির থাকবেন। উপস্থিত থাকবেন বিধায়ক, মন্ত্রীরা। পরশুর এই সভায় একগুচ্ছ রাস্তার (পথশ্রী) এবং জল সরবরাহ প্রকল্পের (জলস্বপ্ন) পাশাপাশি এমকেডিএ-র ৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করা হতে পারে। সেই প্রকল্প হল, ঘাটালের আলমগঞ্জে পাম্প হাউস তৈরি। সেই সঙ্গেই বেশ কিছু স্কুল হস্টেল এবং ৩৬ লাখ টাকা খরচ করে মেদিনীপুরে যে ওয়াচ টাওয়ার বানানো হয়েছে সেটির উদ্বোধন করা হতে পারে। ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা খরচ করে তৈরি দাঁতনের এসিজেএম কোর্ট ভবন, পিংলার ডাংরা সেতু, সবংয়ের রুইনানের মাদুর হাবেরও উদ্বোধন করা হয়ে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকটি আদিবাসী সাংস্কৃতিক দলকে মাদল-ধামসা উপহার দেবেন বলেও খবর।

mamata banerjee public meeting

আরও পড়ুনঃ সিনেদুনিয়ায় দেখা নেই, তবুও কোটিপতি! BJP প্রার্থী হিরণের সম্পত্তির পরিমাণ জানলে ভিরমি খাবেন

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সভা প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সভা করেন, অনেক কিছু বলেন। বহু প্রতিশ্রুতি দেন। তবে কী কাজ হয়, লোকে সেটা বুঝতে পারে না’। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন জঙ্গলমহল হাসছে। তবে সেখানকার মানুষেরা বলেন, তাঁদের কোনও উন্নতিই হয়নি। বিজেপির এই কটাক্ষের পাল্টা দিয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক দীনেন রায় বলেছেন, ‘আসলে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় সভা করলে বিজেপির লোকেরা ভয় পায়। ভূত দেখার মতো চমকে ওঠে ওঁরা’। তাঁর কথায়, ‘এলাকার মানুষেরা মুখিয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী কখন আসবেন। কারণ মানুষ জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে তাঁদের কিছু পাওয়া মেলে। প্রধানমন্ত্রী এলে তো কিছুই পাওয়া যায় না’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর