বাংলা হান্ট ডেস্ক : ঘুষকাণ্ডে (Bribery Case) আর মিলবেনা কোনও সুরক্ষাকবচ। এবার থেকে ঘুষের মামলায় রেহাই পাবেননা কোনও সাংসদ-বিধায়করা। এমনটাই জানালো বিধায়ক ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের (DY Chandrachud Singh) বেঞ্চ। এমনকি ‘ভোটের বদলে নোট’ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে সেই সাংসদ বা বিধায়কের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে জানিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত (Supreme Court)।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে একটি ঘুষের মামলায় আদালতে বলা হয়েছিল যে, ঘুষকাণ্ডেও সাংসদ বিধায়কদের সেরকম শাস্তির মুখে পড়তে হবেনা। এমনকি এটাও বলা হয়েছিল যে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবেনা। আর সোমবার কার্যত সেই রায়কেই খারিজ করে ঐতিহাসিক রায় দিল বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, এইদিন ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও সাত বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন এস বোপান্না, এমএম সুন্দ্রেশ, পিএস নরসিংহ, জেবি পার্দিওয়ালা, সঞ্জয় কুমার এবং মনোজ মিশ্র। রায় ঘোষণার সময় ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আইনপ্রণেতাদের দুর্নীতি এবং ঘুষ ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভেঙে দিচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, ‘ষ তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন তা গ্রহণ করা হয়। সংবিধানের স্বাধীকার ঘুষকে মান্যতা দেয় না। আমরা সমস্ত দিক পর্যালোচনা করেই পুরনো সিদ্ধান্তকে বাতিল করছি।’
এখানে বলে রাখা ভালো, ঘুষকাণ্ডে সাংসদ ও বিধায়কদের সুরক্ষাকবচ দেওয়া হয় ১৯৯৮ সালে। আজ থেকে কয়েক দশক আগে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জানায়, সংসদের মধ্যে আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ভোট বা ঘুষের বিনিময়ে কেউ ভাষণ দিলেন তাকে আইনের আওতায় আনা যাবেনা। এমনকি এটাও বলা হয় যে, সংবিধানের ১৯৪(২) অনুচ্ছেদ ও ১০৫(২) অনুচ্ছেদের আওতায় সেই সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও বিচারপ্রক্রিয়াও শুরু করা যাবেনা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে সাল ২০১২ তে রাজ্যসভায় ভোট দেওয়ার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ওঠে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ সীতা সোরেনের বিরুদ্ধে। সেই সময় তিনি অনুচ্ছেদ ১০৫ এর আওতায় সুরক্ষাকবচের দাবি করেন। তবে তার এই আবেদন খারিজ করে দেয় ঝাড়খণ্ড আদালত। এরপর সেই মামলা ওঠে শীর্ষ আদালতে। সেখানেও সাত বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সাংসদ-বিধায়করা ঘুষকাণ্ডে আইনি সুরক্ষাকবচ পাবেন না। উল্লেখ্য , শীর্ষ আদালতের এই রায়কে সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট দুর্দান্ত রায় দিয়েছে। এর ফলে রাজনীতির পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি রাজনীতির প্রতি জনগণের বিশ্বাসও বাড়বে।’